সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মক্কা-মদিনা তীর্থে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪২ জন ভারতীয়। তাঁদের মধ্যে ১৮ জন হায়দরাবাদের বাসিন্দা একই পরিবারের সদস্য। এদের মধ্যে ৯ শিশু। কার্যত দুর্ঘটনায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে পরিবারটির তিন প্রজন্ম।
মহম্মদ আসিফ নামের এক ব্যক্তি বলেন, "আমার শ্যালিকা, ভগ্নিপতি, তাঁদের ছেলে, তিন মেয়ে এবং তাঁদের সন্তানরা (উমরাহ পালনের জন্য) গিয়েছিল। ওরা আটদিন আগে তীর্থযাত্রা করে। ইতিমধ্যে উমরাহ সম্পূর্ণ হয়েছিল। মদিনায় ফিরছিল সকলে। সেই সময় রাত দেড়টা নাগাদ দুর্ঘটনা ঘটে। বাসে আগুন ধরে যায়। শনিবার ওদের দেশে ফেরার কথা ছিল।" আসিফ আরও জানান, দুর্ঘটনার আগে পর্যন্ত তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল পরিবারটির সঙ্গে। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে নাসিরুদ্দিন (৭০), তাঁর স্ত্রী আখতার বেগম (৬২), ছেলে সালাউদ্দিন (৪২), মেয়ে আমিনা (৪৪), রিজওয়ানা (৩৮) এবং শাবানার (৪০)। এই মেয়েদের সন্তানদেরও মৃত্যু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রবিবার রাতে বাসে মক্কা থেকে মদিনা যাচ্ছিল তীর্থযাত্রীদের দলটি। প্রায় দেড়টা নাগাদ মুফরিহাটের কাছে একটি ডিজেল ট্যাঙ্কারের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বাসটির। দুর্ঘটনার তীব্রতা এতটাই ছিল যে সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় বাসে। ঘুমের মধ্যেই আগুনে ঝলসে যান ৪২ জন। যাঁদের বেশিরভাগই মহিলা ও শিশু। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার পরও কপালজোরে বেঁচে যান হায়দরাবাদের বাসিন্দা ২৪ বছরের মহম্মদ আবদুল শোয়েব। জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় বাসের সামনে চালকের ঠিক পাশের আসনে বসেছিলেন হায়দরাবাদের ওই যুবক। মনে করা হচ্ছে, দুর্ঘটনার পর কোনওভাবে বাসের বাইরে ছিটকে পড়েছিলেন তিনি। এর ফলেই অগ্নিকাণ্ড থেকে রক্ষা পান। আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই যুবক।
সৌদি আরবে দুর্ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘‘মদিনায় ভারতীয় নাগরিকদের দুর্ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত। যাঁরা প্রিয়জনদের হারিয়েছেন সেই সব পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। রিয়াদে আমাদের দূতাবাস এবং জেড্ডায় কনস্যুলেট সম্ভাব্য সকল সহায়তা প্রদান করছে। আমাদের আধিকারিকরা সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছেন।’ সৌদি আরবের ভারতীয় দূতাবাসও ঘটনা মনিটর করছে। খোঁজখবর নেওয়ার জন্য দূতাবাসের তরফে হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি। তিনি রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজিপিকে গোটা ঘটনা মনিটর করার নির্দেশ দিয়েছেন।
