সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক সপ্তাহে দ্বিতীয়বার। লোহিত সাগরে ফের রক্ত ঝরাল ইয়েমেনের সশস্ত্র হাউথি গোষ্ঠী। তাদের ছোড়া মিসাইলে ছারখার হয়ে গেল লাইবেরিয়ার পতাকা লাগানো গ্রিক পণ্যবাহী জাহাজ ‘ইটারনিটি সি’। ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত চারজন নাবিকের। নিখোঁজ ১৫ জন। লোহিত সাগরের বুকে ডুবে যাওয়া জাহাজটির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে নেটদুনিয়ায়।
ব্রিটেনের বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের উপর নজরদারি সংস্থা ইউনাইটেড কিংডম মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস (ইউকেএমটিও) জানিয়েছে, বুধবার লোহিত সাগরের উপর দিয়ে সুয়েজ খালের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল ‘ইটারনিটি সি’। কিন্তু মাঝপথেই পণ্যবাহী জাহাজটিকে ঘিরে ধরে বেশ কয়েকটি হাউথি নৌকা। এরপরই সেটি লক্ষ্য করে পর পর রকেট হামলা চালানো হয়। মিসাইলে ছারখার হয়ে লোহিত সাগরে তলিয়ে যায় ‘ইটারনিটি সি’। আমেরিকার দাবি, জাহাজটির অনেক ‘ক্রু’-কে পণবন্দি করেছে হাউথিরা। অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিতে হবে।
রবিবার রাতেও ইয়েমেনের হাউথি নিয়ন্ত্রিত বন্দর শহর আল হুদায়েদের দক্ষিণ-পশ্চিমে হামলা চালায় সশস্ত্র বাহিনী। সোমবার শেষ দফার হামলায় হাউথিদের বিস্ফোরক বোঝাই কয়েকটি ড্রোনবোট আঘাত করে দুটি পণ্যবাহী জাহাজে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল লাইবেরিয়ার পণ্যবাহী জাহাজ ‘ম্যাজিক সিজ’। লোহিত সাগরের উপরেই দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে জাহাজটি। পরে সেটি তলিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধের মাঝে প্যালেস্টাইনের পক্ষ নিয়ে লোহিত সাগরে আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে সন্ত্রাস শুরু করে ইরানের মদতপুষ্ট সশস্ত্র সংগঠন হাউথি। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে হামলা তীব্র করেছে হাউথিরা। ইয়েমেনের সশস্ত্র সংগঠনটির এই দৌরাত্ম্যের কড়া নিন্দা জানায় বিশ্ব। যদিও তাতে বিন্দুমাত্র থামেনি হাউথি গোষ্ঠী। একের পর এক হামলার জেরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলি তাদের গতিপথ পরিবর্তন করে অন্য পথে যাতায়াত শুরু করে। এই অবস্থায় কোয়াড গোষ্ঠী একজোট হয়ে ওই অঞ্চলের সমুদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নেয়। আমেরিকা-সহ একাধিক দেশ লোহিত সাগরে পাঠায় তাদের যুদ্ধ জাহাজ। মার্কিন হানায় গুঁড়িয়ে গিয়েছে একাধিক হাউথি জাহাজও। কিন্তু তা-ও দমেনি ইয়েমেনের সশস্ত্র সংগঠনটি। তারা জানিয়েছে, যতদিন না গাজায় ইজরায়েলি ফৌজ হামলা বন্ধ করছে ততদিন এই আক্রমণ চলবে।
