সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পৃথিবী বিখ্যাত সুন্দর, মায়াবী বন্ডি বিচ রক্তাক্ত হয়েছে সন্ত্রাসবাদীদের হামলায়। রবিবার ইহুদিদের প্রাচীন উৎসব 'হানুক্কাহ'র শুরুতেই বন্দুকবাজের গুলি ঝাঁজরা করে দিয়েছে অন্তত ১৫ জনকে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে ১০ বছরের এক শিশুও। সাম্প্রতিককালে অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদিদের টার্গেট করে এত বড় হামলা নজিরবিহীন। 'কালো দিন' বলে চিহ্নিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ। এই ঘটনার পর দেশের আগ্নেয়াস্ত্র আইনে আরও রাশ টানতে চলেছে সে দেশের প্রশাসন। প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ স্পষ্ট জানিয়েছেন, আগ্নেয়াস্ত্র আইন আরও কড়া হবে। সোমবারই এনিয়ে ক্যাবিনেটে আলোচনার পর প্রস্তাব পেশের ভাবনা তাঁর। দেশের যাবতীয় অস্ত্র সম্পর্কে রিপোর্ট চেয়েছেন আলবানিজ। তারপরই অস্ট্রেলিয়া প্রশাসন দ্রুত আইন সংশোধনের পথে হাঁটতে পারে বলে খবর।
রবিবার দুপুরে সিডনির অদূরে বিখ্যাত বন্ডি বিচে 'হানুক্কাহ' উৎসব চলাকালীন দুই বন্দুকবাজ ঢুকে পড়ে। জমায়েতের দিকে ধেয়ে আসে গুলিবৃষ্টি। নিমেষে রক্তে লাল হয়ে যায় সোনালি বেলাভূমি। একে একে ১৫ জনের প্রাণহানি ঘটে। পুলিশের তৎপরতায় অবশ্য দুই বন্দুকবাজ ধরা পড়ে। এনকাউন্টার মৃত্যু হয় একজনের, অপর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।
হামলার পর প্রাণ বাঁচাতে হুড়োহুড়ি বন্ডি বিচে।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, হামলাকারীরা সম্পর্কে বাবা-ছেলে। মৃতের বয়স ৫০, সে বাবা। ২৪ বছরের ছেলে হাসপাতালে। অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১৯৯৮ সালে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে বাবা এসেছিল। পরে ধাপে ধাপে তা রেসিডেন্ট ভিসা পেয়ে তারা সে দেশেই থেকে যায়।
জানা গিয়েছে, হামলাকারী বাবা-ছেলে 'শখের শিকারি' বলে পরিচয় দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র জোগাড় করেছিল। লাইসেন্স পেতে ঘোরাঘুরিও করছিল। ৫০ বছরের বাবা একটি গানক্লাবের সদস্য। এক সূত্রের খবর, তারা পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত। তবে ২৪ বছরের ছেলেটির জন্ম অস্ট্রেলিয়াতেই, তা নিশ্চিত করেছে প্রশাসন। কী কারণে তারা ইহুদিদের উপর এত বড় হামলা চালাল, সেই উত্তর খুঁজছে পুলিশ। তবে ঘটনার পর প্রশাসনের সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ নাগরিকরা। বন্ডি বিচে মৃতদের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে চোখের জলে ভাসছেন তাঁরা। এক তরুণীর কথায়, ''আমাদের জাগরণ প্রয়োজন। এভাবে দেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় থাকতে পারে না।'' একইসঙ্গে ইহুদিদের তরফে প্রত্যাঘাতের আশঙ্কাও বাড়ছে। এই অবস্থায় দ্রুত আগ্নেয়াস্ত্র আইন কড়াকড়ির পথে হাঁটছে প্রশাসন।
