সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিভ্রান্তিমূলক, সম্পাদিত খবর সম্প্রচার করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইমেজ নষ্টের চেষ্টা! বিশ্বের সবচেয়ে খ্যাতনামা সংবাদ সংস্থা ব্রিটিশ ব্রডকাস্ট কর্পোরেশন বা বিবিসির বিরুদ্ধে এহেন গুরুতর অভিযোগ উঠল। এর জেরে দায় নিজেদের ঘাড়ে নিয়ে পদত্যাগ করলেন বিবিসির দুই শীর্ষকর্তা। ইস্তফা দিলেন সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল টিম ডেভি ও খবর সম্প্রচার বিভাগের প্রধান ডেবোরা টারনেস। ডেভি ও টারনেস দু'জনেই নাকি স্বীকার করেছেন, ট্রাম্পের তথ্যচিত্রে ওই সম্পাদনার অংশ তাঁদের সম্পাদকীয় নীতি ভেঙেছে। নৈতিকভাবে সেই দায় স্বীকার করছেন তাঁরা। দু'জনের এই পদত্যাগের সিদ্ধান্তে স্বভাবতই নড়েচড়ে বসেছে সহযোগী সংস্থা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলি।
ঘটনার সূত্রপাত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক তথ্যচিত্র ঘিরে। তাতে দেখা গিয়েছে, ২০২১ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিলে হামলা হয়। অভিযোগ, উত্তেজিত জনতা হামলা চালিয়েছিল। তবে আঙুল ওঠে সে বছর নির্বাচনে সদ্য পরাজিত তথা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে। বিবিসির ট্রাম্পকে যে তথ্যচিত্র সম্প্রচার করেছে, তাতে ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় ট্রাম্পকে কার্যত 'ভিলেন' প্রতিপন্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেসময় ট্রাম্পের ভাষণ এমনভাবেই সম্পাদনা করা হয়েছিল যাতে মনে হয়, ওই হামলায় প্রত্যক্ষ উসকানি ছিল তাঁর। আর এখানেই আপত্তি হোয়াইট হাউসের।
সূত্রের খবর, বিবিসির এই তথ্যচিত্র নিয়ে প্রথম প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিনা লেভিট। তাঁর দাবি, ওই ঘটনার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ছিল না ট্রাম্পের। তিনি বরং ক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন। তাহলে সেই বক্তব্য কেন সম্পাদনা করে ভুল বার্তা দিচ্ছে বিবিসি? মাসের পর মাস এনিয়ে চাপ বাড়ছিল বিবিসির ডিরেক্টর জেনারেল টিম ডেভির উপর। শেষমেশ ইস্তফার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। ডেভির পাশাপাশি টারনেসও খবর সম্প্রচার বিভাগের প্রধান হিসেবে এই দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন। দু'জনই আলাদাভাবে জানিয়েছেন যে ওই ঘটনা তাঁদের সম্পাদকীয় নীতির পরিপন্থী।
পৃথিবীর সবচেয়ে বিশ্বস্ত সংবাদ সংস্থা হিসেবে বিবিসির খ্যাতি সর্বজনবিদিত। সেখানেও খবরের স্বার্থে তথ্য বিকৃতির অভিযোগ ওঠা এবং তার দায় নিয়ে দুই শীর্ষকর্তার পদত্যাগ আলোড়ন ফেলেছে গোটা সংবাদ দুনিয়ায়। খবরের মান বজায় এবং নীতি মেনে চলা নিয়ে সংস্থার অন্দরেই দ্বিধাদ্বন্দ্বের মুখে কর্মীরা।
