সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পণবন্দিদের বদলে যুদ্ধ থামাক ইজরায়েল। গাজায় রক্তক্ষয়ী সামরিক অভিযান বন্ধ করে ক্ষমতায় ছেড়ে দেওয়া হোক হামাসকে। গত ৪ মাস ধরে চলতে থাকা লড়াই থামাতে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে এমনই প্রস্তাব দিয়েছিল প্যালেস্টাইনের জঙ্গিগোষ্ঠীটি। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অনড় নেতানিয়াহু। জেহাদিদের নিঃশেষ না করে এই যুদ্ধ তিনি থামাবেন না। নিজের দেশের বন্দিদের বিনিময়েও নয়। সরাসরি হামাসের প্রস্তাব নাকোচ করে দিলেন তিনি।
হামাস জঙ্গিদের নাম মুছে ফেলতে উত্তর গাজা গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইজরায়েলি ফৌজ (Israel)। এবার তোলপাড় করা হচ্ছে দক্ষিণ গাজা (South Gaza)। রয়টার্স সূত্রে খবর, দক্ষিণ গাজার সবচেয়ে বড় শহর খান ইউনিসে বোমাবর্ষণ করছে ইজরায়েল। এই আবহে এক শীর্ষ হামাস নেতা জানিয়েছেন, “গাজায় সামরিক আক্রমণ বন্ধ করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ইজরায়েলের নেতা। ফলে কোনও ইজরায়েলি পণবন্দিকেই আর মুক্তি দেওয়া হবে না।” পালটা দিয়েছেন নেতানিয়াহুও। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “পণবন্দিদের মুক্তির বদলে হামাস যুদ্ধ থামানোর দাবি জানাচ্ছে। চাইছে আমরা গাজা থেকে সেনা সরিয়েনি। সমস্ত খুনি ও ধর্ষক ও হামাস জঙ্গিদের অক্ষত ছেড়ে দেওয়া হোক। কিন্তু আমি মুখের ওপর এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি। হামাস দানবদের কাছে মাথানত করব না।” তাঁর এই বক্তব্যের পর আরও একবার অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছে পণবন্দিদের ভবিষ্যৎ।
[আরও পড়ুন: হাউথি বধে নিখোঁজ ২ মার্কিন কমান্ডোকে মৃত ঘোষণা আমেরিকার]
এদিকে হামাসের হাতে বন্দিদের মুক্তির দাবিতে নেতানিয়াহুর উপর চাপ বাড়াচ্ছে তাঁদের পরিবার। গত মাসেই পার্লামেন্টে বিশেষ অধিবেশনে বক্তব্য রাখাকালীন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর ওপর ক্ষোভ উগড়ে দেন পণবন্দিদের পরিজনরা। প্রিয়জনদের নাম লেখা পোস্টার, ছবি নিয়ে তাঁর কাছে দরবার করেন সকলে। নেতানিয়াহু সকলকে আশ্বস্ত করে বলেন, সেনার অভিযান শেষ করতে আরও সময় দরকার। এর পরই সুর চড়ান সকলে। নেতানিয়াহুর কথার বিরোধিতা করে সকলে চিৎকার করে বলেন, “আর কোনও সময় নেই। যা করতে হবে এখনই করতে হবে। এখন মানে এখনই।”
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের বুকে বেনজির হামলা চালায় প্যালেস্টাইনের জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস। ওই আক্রমণে মৃত্যু হয় ১২০০ জন ইজরায়েলির। জেহাদিদের হাতে পণবন্দি হন ২৪০ জন। গত নভেম্বর মাসে সাময়িক যুদ্ধ বিরতিতে মুক্ত হয়েছিলেন ১০৫ জন। কিন্তু এখনও বন্দি রয়েছেন শতাধিক। ইহুদি দেশটির হামলায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৪ হাজারের উপর প্যালেস্তিনীয়র।