shono
Advertisement

চিনের জলসীমায় ভারতীয় নাবিকদের প্রবেশে ‘নিষেধাজ্ঞা’, কর্মহীন হতে পারেন ২১ হাজার

করোনার ডেল্টা স্ট্রেন রুখতেই এই পদক্ষেপ বলে জানাচ্ছে চিনা কর্তৃপক্ষ।
Posted: 10:06 AM Jul 26, 2021Updated: 11:48 AM Jul 26, 2021

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের (India) নাবিকদের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল চিন (China)। এমনই জানানো হয়েছে সমুদ্র যাত্রা কর্মী সংগঠনের তরফ থেকে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে চিনগামী পণ্যবাহী জাহাজগুলি থেকে কাজ হারাতে শুরু করেছেন ভারতীয় নাবিকরা। ভারতীয় ক্রু সদস্যদের চিনের বন্দরে প্রবেশের উপর বেজিংয়ের জারি করা এই নিষেধাজ্ঞা অবশ্য সরকারিভাবে নয়।

Advertisement

অল ইন্ডিয়া সিফারের অ্যান্ড জেনারেল ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় বন্দর, জাহাজ এবং জলপরিবহণ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়ালকে চিঠি দিয়েছে। চিনের বেসরকারি নিষেধাজ্ঞা নিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বিদেশ মন্ত্রককেও। সংগঠনের দাবি, কার্যত চিনের জলসীমার মধ্যেই প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না ভারতীয় নাবিক এবং জাহাজের অন্য কর্মীদের। এর ফলে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে অন্তত ২১ হাজার মানুষ কর্মহীন হবেন। সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি অভিজিৎ সাঙ্গলে জানিয়েছেন, “এটা আসলে চিনের একটা কৌশল। ভারতীয় নাবিক এবং জাহাজ কর্মীদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে নিজেদের নাবিক এবং জাহাজ কর্মীদের কর্মসংস্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে চিন। কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল, বিদেশ মন্ত্রক এবং ডিজি শিপিং-কে চিঠি দিয়ে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অনুরোধ করেছি। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে আলাদা একটি চিঠি দিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করার অনুরোধ করেছি।” তিনি আরও বলেছেন, “চলতি বছরের শুরুতেও একইরকম সমস্যা সৃষ্টি করেছিল। ভারতীয় নাবিকরা থাকায় দু’টি পণ্যবাহী বিদেশি জাহাজকে চিনের বন্দরে নোঙর করতে দেয়নি চিন। এর ফলে ৪০ জনের বেশি ভারতীয় ক্রু সদস্য কয়েক সপ্তাহ চিনে আটকে ছিলেন।”

[আরও পড়ুন: ‘আফগানিস্তানের পরিস্থিতি ভয়াবহ’, নির্দেশিকা জারি করে সতর্ক করল ভারতীয় দূতাবাস]

অন্যদিকে, ডিজি শিপিং অমিতাভ কুমার জানিয়েছেন, “চিন সরকার বা বিদেশ মন্ত্রকের কাছ থেকে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে কোনও চিঠি তাঁরা পাননি। ২১ হাজার ভারতীয় নাবিক কর্মহীন হতে পারেন, এমন কোনও তথ্যও তাঁদের কাছে নেই। বিভিন্ন মানুষের ব্যক্তিগত মতামত একেকরকম হয়। আমরা যে কারও মতামতের ভিত্তিতে প্রতিক্রিয়া দিতে পারি না। বিদেশমন্ত্রকের একটি সূত্রও জানিয়েছে, তারাও এমন কোনও চিঠি পায়নি। ন্যাশনাল শিপিং বোর্ডের সদস্য ক্যাপ্টেন সঞ্জয় পরাশর বলেছেন, “চিন আসলে বিদেশি জাহাজ সংস্থাগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করছে। ভারতীয় ক্রু সদস্য না থাকলে জাহাজগুলি চিনের বন্দরগুলি থেকে পণ্য ওঠাতে বা নামাতে পারবে বলে অনৈতিক শর্ত চাপাচ্ছে। চিনের জলসীমায় প্রবেশ করতে হলে কোনও ভারতীয় নাবিক বা কর্মীকে জাহাজে রাখা যাবে না বলে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে জাহাজগুলিকে পথ বদল করতে হচ্ছে। তাতে জ্বালানির খরচ বেড়ে যাচ্ছে অনেক। খরচ বাঁচাতে গেলে সংস্থাগুলিকে ভারতীয় নাবিক ও কর্মীদের ছাঁটাই করার পথে হাঁটতে হচ্ছে। পাঁচ সদস্যের ক্রু দল বদল করতে খরচ হয় তিন থেকে পাঁচ লক্ষ ডলার। চিন আসলে একরকম গুন্ডামি করছে। একমাত্র কূটনৈতিক পথেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।”

উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী পণ্যবাহী জাহাজগুলির নাবিক এবং কর্মীদের অধিকাংশই ভারতীয়। গত বছরের হিসাব অনুযায়ী প্রায় দু’লাখ ৪০ হাজার ভারতীয় নাবিক এবং অন্য কর্মী কর্মরত। তাঁদের মধ্যে ২.১ লাখ কর্মীই কাজ করেন বিদেশি জাহাজ সংস্থাগুলিতে। ভারতীয় সংস্থাগুলিতে কাজ করেন ৩০ হাজার ভারতীয় কর্মী। চিনের এই চাপের ফলে মার্কিন এবং ইউরোপীয় জাহাজ সংস্থাগুলি ভারতীয় নাবিক এবং কর্মীদের রাখতে চাইছে না। কারণ তাতে তাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে অনেক। ভারতীয় নাবিক এবং কর্মীদের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির ক্ষেত্রে ভারতে করোনার ভয়াবহ দ্বিতীয় ঢেউকেই কারণ হিসাবে তুলে ধরছে চিন। করোনার ডেল্টা স্ট্রেন রুখতেই এই পদক্ষেপ বলে জানাচ্ছে চিনা কর্তৃপক্ষ।

[আরও পড়ুন: আফগান সেনার প্রত্যাঘাত, বিমান হানায় Afghanistan’এ নিকেশ আড়াইশোর বেশি তালিবান]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement