সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার অতিমারির সময়ে চিনের মুখোশ খুলে দিয়েছিলেন এক সাংবাদিক। জিনপিং প্রশাসনকে কার্যত নগ্ন করেছিলেন বিশ্বের সামনে। তার ফল আজ ভুগতে হচ্ছে চিনা সাংবাদিক ঝাং ঝানকে। চার বছরের শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ফের জেলবন্দি করা হল তাঁকে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর সরব হয়েছে গোটা বিশ্ব। অবিলম্বে ওই সাংবাদিকের মুক্তির দাবিতে সরব খোদ রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশন।
দাবি করা হয়, ২০১৯ সালের শেষের দিকে বিশ্বের মধ্যে প্রথম করোনার ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটেছিল চিনের উহান প্রদেশে। সেই সময়ে এই অতিমারির ভয়াবহতা প্রকাশ্যে আনেন সাংবাদিক ঝাং ঝান। উহানের জনশূন্য রাস্তাঘাট ও রোগীর ভিড়ে উপচে পড়া হাসপাতালের ছবি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন তিনি। ওই সাংবাদিকের প্রতিবেদন রাতারাতি বিশ্বের নজর কেড়ে নেয়। এরপরই দাঁত-নখ বের করে জিনপিং প্রশাসন। কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয় চিনের সমস্ত সংবাদপত্র। ২০২০ সালে ঝাংকে দেশে হিংসা ও দাঙ্গা ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করে ৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেই সময়ে জেলে অনশন শুরু করেছিলেন সাংবাদিক। তবে অনশন ভাঙতে তাঁর হাত-পা বেঁধে গ্যাস্ট্রিক টিউবের মাধ্যমে খেতে বাধ্য করে চিন সরকার। ৪ বছর জেল খাটার পর সম্প্রতি মুক্তি দেওয়া হয়েছিল ঝাংকে।
তবে ঝাং জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার মাত্র ৩ মাস পর ফের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁকে। অভিযোগ একই, দাঙ্গা ও হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন ঝাং। নতুন করে সাংহাই আদালতে তাঁর বিচারপ্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গিয়েছে। তবে সেই মামলার শুনানিতে ইউরোপীয় এবং উত্তর আমেরিকার কূটনীতিকদেরও নথিপত্র নিয়ে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলি। এই ঘটনাকে 'রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস' বলে তোপ দেগেছে। দাবি করা হয়েছে, ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার সংগঠন।
জিনপিং প্রশাসনের বিরুদ্ধে তোপ দেগে রাষ্ট্রসংঘ জানিয়েছে, করোনার সময় ঝাং-এর প্রতিবেদন অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছিল। ওই প্রতিবেদন চিনের বাস্তব বিশ্বের সামনে এনেছিল। এরপর, ওই সাংবাদিকের সঙ্গে যা ঘটছে তা বাকস্বাধীনতাকে খুন করার সামিল।
