সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকার তরফে ভারতের উপর বাড়তি শুল্ক চাপানোর ঘটনায় কিছুটা হলেও ফাটল ধরেছে দুই দেশের সম্পর্কে। এরইমাঝে ভারতের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিপ অফ স্টাফ বা ট্রাম্পের পরামর্শদাতা স্টিফেন মিলার। তাঁর অভিযোগ, "ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চিনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে যুদ্ধবাজ পুতিনকে সাহায্য করছে ভারত। এই ঘটনা আশ্চর্যজনক হলেও সত্য।"
সানডে মর্নিং ফিউচার্স নামে এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারত ও চিনের মধ্যে গোপন আঁতাতের অভিযোগ তুলেছেন মিলার। তিনি বলেন, "মার্কিন ডোনাল্ড ট্রাম্পের তরফে স্পষ্ট ভাষায় জানানো হয়েছে, রাশিয়া থেকে অস্ত্র এবং খনিজ তেল কেনা বন্ধ করতে হবে ভারতকে।" একইসঙ্গে জানান, "মানুষ জেনে অবাক হবেন ভারত ও চিন জোট বেঁধেছে। রাশিয়ার থেকে বিপুল পরিমাণ তেল কিনছে তারা। আসলে এভাবে ওরা ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে অর্থ সাহায্য করে যাচ্ছে।"
মিলারের এহেন বক্তব্য এমন সময়ে সামনে এল যখন ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। যা পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার তুলনায় বেশি। এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের তেল ও অস্ত্রের বাণিজ্যকে তিনি ভালো চোখে দেখছেন না। তিনি জানিয়েছেন, "রাশিয়ার সঙ্গে মিলে ভারত তাদের মৃত অর্থনীতিকে আরও অধঃপতনের দিকে নিয়ে যাক।" যদিও এদিন স্টিফেন জানিয়েছেন, "ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করতে চায় আমেরিকা। কিন্তু যুদ্ধে অর্থ যোগানোর এই ইস্যুতে আমাদের আরও বাস্তবসম্মত হতে হবে। ইউক্রেনে যুদ্ধ থামিয়ে শান্তি ফেরাতে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য সব বিকল্প পথ ট্রাম্প খোলা রেখেছেন।"
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল রাশিয়া। সেই যুদ্ধ এখনও চলছে। যুদ্ধ থামাতে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলি রাশিয়ার উপর একাধিক বিধিনিষেধ চাপালে মস্কোর অর্থনীতি কিছুটা ধাক্কা খায়। তবে ভার-চিনের মতো একাধিক দেশ রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের আমদানি থামায়নি। আমেরিকা বারবার অভিযোগ করেছে এই বাণিজ্যের জেরেই অর্থের যোগান মিলছে রাশিয়ায় যার জেরেই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন পুতিন। তবে ভারতের উপর আমেরিকা শুল্ক চাপালেও নয়াদিল্লির তরফে জানা যাচ্ছে, রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করে দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই ভারতের। এক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থই প্রাধান্য পাবে। এই ঘটনায় এবার চিন-ভারতের আঁতাত দেখছে ওয়াশিংটন।
