সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঘোষণা হয়েছিল আগেই। এবার হল তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। আমেরিকায় চালু হল গোল্ড কার্ড। মার্কিন ভিসা ব্যবস্থায় নতুন অধ্যায় এনে দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়ে এলেন ট্রাম্প গোল্ড কার্ড' (Donald Trump Gold Card) ইমিগ্রেশন প্ল্যান। নতুন এই ব্যবস্থায় এক দফায় ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ন'কোটি টাকা বিনিয়োগ করলেই আবেদনকারী পেতে পারেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি। প্রকল্প চালু করে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের ঘোষণা, "আমাদের কোষাগার ফুলেফেঁপে উঠবে।"
ইতিমধ্যেই 'ট্রাম্প গোল্ড কার্ড'-এর জন্য আলাদা ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে, যেখানে অনলাইনে আবেদন গ্রহণও শুরু হয়ে গেছে। ভিসা অনুমোদনের প্রক্রিয়া হবে দ্রুত, তবে আবেদনকারীদের প্রতিটি ধাপে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের ফি। বড় বড় সংস্থাগুলিও এই স্কিমের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে যে কোনও বিদেশি কর্মীকে আমেরিকায় এনে স্থায়ীভাবে রেখে দিতে পারবে। কিছুদিন আগেই ভিসা ফি, বিশেষত এইচওয়ানবি ভিসা, অর্থাৎ কর্মী ভিসার ফি এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়েছে হোয়াইট হাউস। বিদেশি কর্মী এনে দেশের নাগরিকদের 'বঞ্চিত' হওয়া রুখতেই তাঁর এহেন পদক্ষেপ বলে দাবি করেছিলেন তিনি। সেই সময়েই ট্রাম্প গোল্ড কার্ডের বিষয়ে ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু এই কার্ড এনেও পরোক্ষে সেই পথই প্রশস্ত করলেন তিনি। সঙ্গে অবশ্য ভরল মার্কিন কোষাগারও।
লঞ্চ ইভেন্টে অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত ট্রাম্প জানান, এই প্রোগ্রাম গ্রিন কার্ডের মতো হলেও সুবিধা আরও বেশি। তাঁর দাবি, প্রযুক্তি ও ব্যবসা খাতে দীর্ঘদিন ধরে চলা নিয়োগ সংকট এবার অনেকটাই কমবে। তিনি জানান, অ্যাপল সিইও টিম কুকই প্রথম তাঁকে এই কথা বলেছিলেন। তবে বক্তব্যে ছিল খানিক অনুযোগও। ট্রাম্পের কথায়, এতদিন অনেক প্রতিভাবান স্নাতক ভিসা অনিশ্চয়তার কারণে ভারত, চিন বা ইউরোপে চলে যেতে বাধ্য হতেন। কিন্তু 'ট্রাম্প গোল্ড কার্ড'-এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলো এখন তাদের প্রয়োজনীয় বিদেশি কর্মীদের স্থায়ীভাবে আমেরিকায় রাখার ব্যবস্থা করতে পারবে।
মার্কিন বিদেশ দপ্তর সূত্রে খবর, ব্যক্তিগত গোল্ড কার্ডের জন্য আবেদন করতে হলে মার্কিন বিদেশ দপ্তরকে প্রাথমিকভাবে ১৫,০০০ ডলার প্রসেসিং ফি জমা দিতে হবে। আবেদন বাতিল হলেও এই টাকা ফেরত দেওয়া হবে না। প্রয়োজনীয় নথি জমা এবং ফি দেওয়ার পর প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং অনুমোদন মিললে জমা দিতে হবে দশ লক্ষ মার্কিন ডলার। অন্যদিকে, কর্পোরেট গোল্ড কার্ডের জন্য কোনও কোম্পানি এক বা একাধিক বিদেশি কর্মী নিয়োগ দিতে চাইলে প্রতি কর্মীর জন্য ১৫,০০০ ডলার প্রসেসিং ফি নির্ধারিত। যাচাই শেষে দিতে হবে ২০ লক্ষ মার্কিন ডলার, যা ব্যক্তিগত গোল্ড কার্ডের দ্বিগুণ। তবে কোনও নতুন কর্মীকে আনতে হলে ১৫,০০০ ডলার প্রসেসিং ফি দিতে হলেও বাড়তি ২০ লক্ষ ডলার আর দিতে হবে না। ফলে আমেরিকার জন্য দ্বারোদঘাটন একই সঙ্গে সহজ এবং মূল্যবান হচ্ছে কর্মীদের জন্য। সোশাল মিডিয়ার পাতা অবশ্য এই ইস্যুতে ট্রাম্পের পক্ষে এবং বিপক্ষে, বিভিন্ন মতামতে ভরে উঠছে।
