সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের হামলা মায়ানমারে। আসন্ন নির্বাচনের আগেই ফের সাধারণ মানুষের উপরে সামরিক জুন্টা বাহিনীর বিমান হামলা। বুধবার রাতে পশ্চিম রাখাইন প্রদেশের একটি হাসপাতালে সামরিক বাহিনী হামলার ঘটনায় নিহত ৩৪ জনেরও বেশি। আহত অন্তত ৬৮ জন।
জানা গিয়েছে, আক্রান্ত হাসপাতালটি রাখাইন প্রদেশের ম্রাউক-ইউ শহরে অবস্থিত। এই এলাকাটি আরাকান সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দেশের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করা সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনীগুলির মধ্যে একটি এই আরাকান বাহিনী।
মায়ানমারের সেনাবাহিনী এই হামলার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। সামরিক অভ্যুত্থানের পরে প্রথমবার দেশে নির্বাচন হবে এই মাসের শেষে। প্রথম নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণের প্রস্তুতির মাঝেই এই ঘটনা ঘটেছে। তবে, সমাজ মাধ্যমে জুন্টা-পন্থী অ্যাকাউন্টগুলি দাবি করেছে, এই সপ্তাহের হামলাগুলি সাধারণ মানুষের উপরে করা হয়নি।
অন্যদিকে, আরাকান বাহিনীর মুখপাত্র খাইং থুখা জানিয়েছেন, হতাহতের বেশিরভাগই হাসপাতালে থাকা রোগী। তিনি বলেন, "এটি সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী সেনাবাহিনীর সর্বশেষ নৃশংস আক্রমণ।" তিনি আরও বলেন যে সাধারণ মানুষের উপর বোমা হামলার জন্য সামরিক বাহিনীকে "দায়িত্ব নিতে হবে।" আরাকান বাহিনীর স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে যে রাত ৯টা নাগাদ হওয়া এই হামলায় ঘটনাস্থলেই ১০ জন রোগী নিহত হন এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন।
সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গিয়েছে ওই হাসপাতালের ছাদ উড়ে গিয়েছে এবং বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে বিছানা এবং অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জামের ভাঙা অংশ।
মায়ানমারের জুন্টা বাহিনী আগামি ২৮ ডিসেম্বর দেশে সাধারণ নির্বাচনের ডাক দিয়েছে। একে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পথ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে তাঁরা। কিন্তু, বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হবে না। বদলে এই নির্বাচন আসলে জুন্টাকে বৈধতা দেবে। জাতিসংঘের মায়ানমার বিষয়ক মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ টম অ্যান্ড্রুজ একে 'ভুয়ো নির্বাচন' বলেছেন।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে ভোটে সমস্যা তৈরির চেষ্টার অভিযোগে সাধারণ মানুষদের গ্রেপ্তার করেছে জুন্টা। সমাজ মাধ্যমে লেখার অপরাধেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে একজনকে। জুন্টা সোমবার জানিয়েছে, তাঁরা নির্বাচন বিরোধী বিক্ষোভে জড়িত ১০ জনকে খুঁজছে।
