সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেয়ে হয়েও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তালিবানদের হাতে আক্রান্ত হতে হয়েছিল পাকিস্তানের কিশোরী মালালা ইউসুফজাইকে। তারপরও অবশ্য পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। পরিবারের সমর্থনেই অসম লড়াইয়ে জয় এসেছিল। প্রায় একই ধরনের সমর্থন নিজের মেয়েদের করছেন আফগানিস্তানের সাহরানা এলাকার বাসিন্দা মিয়া খান। নিজে অশিক্ষিত হয়েও মেয়েদের পড়াশোনার জন্য মৃত্যুভয়কেও হেলায় অগ্রাহ্য করছেন তিনি। তালিবানি জঙ্গিদের রক্তচক্ষুকে অস্বীকার করে রোজ বাইকে তিন মেয়েকে বসিয়ে ১২ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে স্কুলে দিয়ে আসেন তিনি। আর স্কুল ছুটি হওয়া পর্যন্ত বাইরে অপেক্ষা করে ফের তাদের বাড়ি ফিরিয়ে আনেন। মিয়া খানের এই লড়াইয়ের কথা সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট হওয়ার পরেই ভাইরাল হয়েছে। আর নেটিজেনদের হৃদয় জয় করেছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ইরানের বিয়ে বাড়িতে জঙ্গি হামলা, মৃত কমপক্ষে ১১]
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আফগানিস্তানের সাহরানা এলাকায় যথেষ্ট দাপট রয়েছে তালিবানের। তা সত্ত্বেও তিন মেয়ের পড়াশোনার ইচ্ছাকে সমর্থন জানিয়েছেন মিয়া খান। আর তাই বাইকে প্রতিদিন ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মেয়েদের স্কুলে পৌঁছে দিয়ে আসেন। মেয়েরা স্কুলে ঢুকে যাওয়ার পরে ছুটি হওয়া পর্যন্ত বাইরে অপেক্ষা করেন। আর ছুটি হতেই ফের তাদের নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। বর্তমানে এটাই রুটিন হয়ে গিয়েছে তাঁর। এলাকায় কোনও মহিলা ডাক্তার নেই। তাই মেয়েদের পড়াশোনা করিয়ে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
এপ্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মিয়া খান বলেন, ‘আমি অশিক্ষিত। দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাই। আমার এলাকায় কোনও মহিলা ডাক্তার নেই। তাই মেয়েদের পড়াশোনা করিয়ে ডাক্তার করতে চাই। এই জন্য আমার ছেলে থাকলে যেরকম সাহায্য করতাম মেয়েদেরও সেরকম সাহায্য করছি। ওদের উচ্চশিক্ষিত করে তোলাই আমার জীবনের সবথেকে বড় লক্ষ্য।’
[আরও পড়ুন: বিয়ের জন্য পাকিস্তান থেকে নাবালিকা ও মহিলা কিনছে চিন!]
আফগানিস্তানের যে স্কুলে মিয়া খানের মেয়েরা পড়ে সেটি চালায় সুইডিশ কমিটি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সম্প্রতি মিয়া খানের ঘটনাটির কথা উল্লেখ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি পোস্ট করে তারা। তারপরই অকুতোভয় ওই বাবার প্রশংসায় মেতে উঠেছেন নেটিজেনরা। তাঁদের মতে, এই ধরনের বাবার জন্য গর্ব করা উচিত। উনি সত্যিই একজন নায়ক।
The post তালিবানদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রোজ মেয়েদের স্কুলে পৌঁছে দেন বাবা appeared first on Sangbad Pratidin.