সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই অবসরে দীর্ঘদিনের ‘বাণিজ্যবন্ধু’ রাশিয়াকে আরও কাছে টানছে ভারত। বৃহস্পতিবারই মস্কোর সঙ্গে আরও মজবুত বাণিজ্যসম্পর্ক গড়ার বার্তা দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। একই সময়ে রাষ্ট্রসংঘে আমেরিকার প্রাক্তন প্রতিনিধি নিকি হ্যালি আশঙ্কা প্রকাশ করলেন, ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের ফলে ইন্দো-মার্কিন সম্পর্কে তলানিতে পৌঁছবে। ফলে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের রাশ আরও বেশি করে চিনের হাতে চলে যেতে পারে।
একটি মার্কিন সংবাদপত্রে প্রতিবেদন অনুযায়ী নিকি বলেছেন, চিন ও ভারতের সঙ্গে কখনই এক ব্যবহার হওয়া উচিত না। শুল্ক নিয়ে কিংবা ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে মার্কিন ভূমিকা নিয়ে বিশ্বের দুটি বৃহত্তম গণতন্ত্রের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা উচিত নয় ট্রাম্প প্রশাসনের। এইসঙ্গে অবশ্য নিকি বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের বিদেশ নীতির অন্যতম লক্ষ্য কূটনীতিতে চিনকে পরাজিত করা এবং শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে শান্তি অর্জন, মার্কিন-ভারত সম্পর্ককে মসৃণ পথে ফিরিয়ে আনার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই মস্কো সফরে রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী ডেনিস মান্তুরভের পাশে বসে জয়শংকর বলেছেন, “আরও বেশি কাজ করা এবং অন্য রকম কাজ করা আমাদের মন্ত্র হওয়া উচিত।” স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “শুল্ক এবং অন্য বাধার অপরাসণে সরবরাহ সহজ করতে হবে। আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহন করিডোর, উত্তর সমুদ্রপথ এবং চেন্নাই-ভ্লাদিভোস্তক করিডোরের মাধ্যমে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি উভয় সংস্থাগুলির আর্থিক বিনিময় মসৃণ করতে হবে।” বিদেশমন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন যে সাম্প্রতিক বৈঠকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (FTA) শর্তাবলী চূড়ান্ত করেছে মস্কো। এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে বর্ণনা করেন জয়শংকর।
এদিকে ট্রাম্পের চোখরাঙানি সামাল দিতে ভারতের প্রতি উদার ‘বন্ধু’ পুতিন, তেলে আরও বেশি ছাড় দিচ্ছে রাশিয়া! উল্লেখ্য, গত মাসে ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তারপর রুশ তেল আমদানির ‘অপরাধে’ আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপে ভারতের উপর। এহেন পরিস্থিতিতে বুধবার জানা যায়, সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসের জন্য রাশিয়াকে বিপুল পরিমাণ তেলের বরাত দেওয়া হয়েছে। তার কারণ সম্প্রতি ব্যারেলপ্রতি তিন ডলার ছাড় দেওয়া হয়েছে উরালের তেলে। হিসাব অনুযায়ী, এই ছাড়ের অঙ্কটা ৫ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, ভারত প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ব্যারেল তেল আমদানি এবং ব্যবহার করে। ফলে প্রতি ব্যারেলে তিন ডলার ছাড়টাই শেষ পর্যন্ত ভারতের জন্য বিরাট অঙ্কের সাশ্রয় হবে। দেশের বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার থেকেও ব্যয় কমবে। এই মুনাফার বিষয়গুলি মাথায় রেখেই রাশিয়া থেকে তেল কেনার পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিল ভারত। তবে এই নিয়ে সরকারিভাবে কোনও পক্ষই কিছু জানায়নি।
