সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনের (China) জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের উপর অবর্ণনীয় অত্যাচারের কাহিনি তুলে ধরেছিলেন। পেশার প্রতি নিষ্ঠা, সততা থেকেই কঠিন এই কাজকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই কাজই যে তাঁকে আন্তর্জাতিক স্তরে এত বড় স্বীকৃতি এনে দেবে, তা স্বপ্নে তো ভাবেনইনি, কোনও প্রত্যাশাও ছিল না। অথচ বাস্তবে ঘটে গেল তেমনই এক ঘটনা। নির্ভীক সাংবাদিকতার জন্য পুলিৎজার পুরস্কার (Pulitzer Prize) পেলেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত সাংবাদিক মেঘা রাজাগোপলন। স্থানীয় স্তরে সাংবাদিকতায় দারুণ পারফরম্যান্সের জন্য পুলিৎজার এসেছে ভারতীয় বংশোদ্ভুত আরও এক সাংবাদিকের হাতে। তাঁর নাম নীল বেদি। ফলে সাংবাদিকতায় জোড়া পুলিৎজারে ভারতের এই নিবিড় যোগে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত দেশের সাংবাদিক মহল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজফিড (Buzz Feed)সংস্থার সাংবাদিক মেঘা। সাংবাদিক জীবন নাতিদীর্ঘ। কিন্তু চ্যালেঞ্জ নিয়ে বারবার সফল হওয়ায় কঠিন অ্যাসাইনমেন্টের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। এবারও কাজ ছিল বেশ কঠিন। চিনে উইঘুর মুসলিমদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ তো অজস্র। কিন্তু তা তথ্যপ্রমাণ-সহ পেশ করা মোটেই সহজ নয়। আর মেঘাকে সেই চ্যালেঞ্জিন কাজই করতে হতো। অসীম সাহসিকতা আর অদম্য নিষ্ঠার জোরেই সেই কাজ উতরে দিয়েছেন তিনি। তৈরি করে ফেলেছিলেন ‘জিনজিয়াং সিরিজ’।
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রের আপ্রাণ চেষ্টাতেই বাগে এসেছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, কুয়েতে মন্তব্য জয়শংকরের]
এই জিনজিয়াং (Xinjiang) বিখ্যাত উইঘুর মুসলিমদের বাসস্থান হিসেবে। আর সাংবাদিক মেঘার তৈরি সেই ‘জিনজিয়াং সিরিজ’ই ২০২১এ সাংবাদিকতা বিভাগে পুলিৎজার পুরস্কার জিতে নিল। এই স্বীকৃতির পর মেঘার প্রতিক্রিয়া, “ভাবিইনি এমন একটা বড় পুরস্কারের জন্য আমার কাজ বেছে নেওয়া হবে। তাই পুলিৎজার পুরস্কার বিতরণীর অনুষ্ঠানও দেখিনি। একটা ফোন পাওয়ার পর সব জানলাম।” পুলিৎজারের নগদ ১৫ হাজার মার্কিন ডলার তিনি ভাগ করে নিতে চান দুই সহকর্মী অ্যালিসন কিং এবং ক্রিস্টো বাসচেকের সঙ্গে।
[আরও পড়ুন: ‘পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক চায় ভারত’, রাষ্ট্রসংঘে বার্তা নয়াদিল্লির]
মেঘা একাই নন, সাংবাদিকতা বিভাগে স্থানীয় স্তরে ভাল কাজের জন্য পুলিৎজার পেয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত আরও একজন। ট্যাম্পা বে টাইমসের সাংবাদিক নীল বেদি (Neil Vedi)। আমেরিকার ফ্লোরিডায় নানা দুষ্কৃতীমূলক কার্যকলাপের তদন্তে তিনি পুলিশকে সাহায্য করেছিলেন নিজের তদন্তমূলক সাংবাদিকতার জোরে। পুলিশের তরফেও প্রশংসা মিলেছিল ঢালাও। সেই কাজই এবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে স্বীকৃতি পেল। দুই ভারতীয় বংশোদ্ভুত সাংবাদিকের এত বড় সাফল্যে আনন্দে ভাসছেন ভারতের সাংবাদিকরা। বিশেষভাবে প্রশংসিত হচ্ছে মেঘা রাজাগোপালনের সাহসিকতা।