সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিজাব বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল ইরান (Iran)। বিপুল সংখ্যক জনতা রাস্তায় নেমে হিজাব পরার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। বিদ্রোহ (Hijab Protest) দমনের নামে লাগাতার অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে ইরানের প্রশাসন। এবার হিজাব বিরোধী বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিল তেহরানের আদালত। ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অন্যায়ের অভিযোগেই ওই প্রতিবাদীকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে। হিজাব বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য এই প্রথমবার মৃত্যুর সাজা ঘোষণা করেছে ইরানের প্রশাসন।
ইরানের জাতীয় মিডিয়ার তরফে মৃত্যুদণ্ডের সাজা পাওয়া ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি। শুধু জানা গিয়েছে,প্রতিবাদের সময়ে সরকারি সম্পত্তিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। সেই জন্যই তেহরানের আদালত তাঁকে ‘ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অপরাধে’ দোষী সাব্যস্ত করেছে। সাজা হিসাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিবাদীকে। সেই সঙ্গে আরও পাঁচ প্রতিবাদীকে দশ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ইরানের অপর একটি আদালত। সব মিলিয়ে কুড়ি জন প্রতিবাদীর বিরুদ্ধে এমন মামলা দায়ের করা হয়েছে, যেখানে দোষী সাব্যস্ত হলেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।
[আরও পড়ুন: জিনপিংয়ের হাতে হাত বাইডেনের, নজরকাড়া বৈঠকে ‘দুই মেরু’র রাষ্ট্রপ্রধান]
ইরানে কর্মরত মানবাধিকার কমিশনের তরফে অনুমান করা হচ্ছে, বড় সংখ্যায় প্রতিবাদীদের মেরে ফেলার পরিকল্পনা করছে ইরানের প্রশাসন। অবিলম্বে এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলিকে হস্তক্ষেপ করতে অনুরোধ করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলি। প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে এহেন নৃশংস আচরণ করার ফল ভুগতে হবে ইরানের মৌলবাদী প্রশাসনকে,এমন বার্তাও দিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনের প্রধানরা।
প্রায় দু’মাস ধরে হিজাব বিরোধী আন্দোলনের জেরে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে ইরান। শুধুমাত্র হিজাব না পরার কারণে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় ইরানের তরুণী মাহসা আমিনির। তারপরেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে গোটা ইরান। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত হিজাব বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে অন্তত সাড়ে তিনশোজন প্রতিবাদীকে হত্যা করেছে সেদেশের প্রশাসন। প্রায় পনের হাজার প্রতিবাদীকে নানা অভিযোগে আটক করা হয়েছে। সারা বিশ্বের মানুষ ইরানের বিক্ষোভকারীদের সমর্থন জানিয়েছেন, তা সত্বেও কঠোর নীতি আঁকড়ে বসে রয়েছে মৌলবাদী প্রশাসন। শত বিপদের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে এখনও প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন ইরানের সাধারণ মানুষ।