সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিজাব (Hijab) না পরার ‘শাস্তি’ অমানুষিক নির্যাতন! পুলিশের মারে ইরানের (Iran) ২২ বছরের তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় শিহরিত বিশ্ব। কিন্তু প্রশাসনের রক্তচক্ষুর কাছে হার মানতে নারাজ সাধারণ মানুষ। শনিবারই পশ্চিম ইরানে গর্জে উঠতে দেখা গেল অসংখ্য মহিলাকে। রাজপথে নেমে এসে তাঁরা হিজাব খুলে ফেলে স্লোগান দিলেন ‘একনায়কের মৃত্যু চাই’। এহেন প্রতিবাদের ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
ঠিক কী হয়েছিল মাহশার? কুর্দিস্তান থেকে দেশের রাজধানী তেহরানে যাচ্ছিলেন ওই তরুণী। সেখানে আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন তিনি। এই সময়ই আচমকা তিনি ইরানের ‘নীতি পুলিশবাহিনী’র চোখে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। পরে জানা যায়, তরুণী থানায় গুরুতর আহত হয়েছেন পুলিশের। কোমায় আচ্ছন্ন অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। পরে চিকিৎসকরা ঘোষণা করেন, তাঁর মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: হস্টেল থেকে ৬০ ছাত্রীর স্নানের ভিডিও ভাইরাল, লজ্জায় আত্মহত্যার চেষ্টা, উত্তাল পাঞ্জাব]
এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন মাহশার ভাই। সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁতে বলতে শোনা যায়, ”আমরা লড়ব। কিন্তু সকলেই জানে এখানকার সিস্টেমটা কেমন। তবু আমি চুপ থাকব না। আমি সকলকে বলব ইরানে কী ঘটছে।” ওই তরুণীর জিজ্ঞাসাবাদের একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করে পরিস্থিতি সামাল দিতে চেয়েছে নীতি পুলিশ। কিন্ত সেখানে ১৯ সেকেন্ডের ভিডিও নেই। যা ঘিরে বিতর্ক আরও ঘনীভূত হয়েছে। অবশেষে শনিবারই রাজপথে নেমে হিজাব খুলে প্রতিবাদে ফেটে পড়তে দেখা গেল ইরানের মহিলাদের। প্রশাসন কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে চাইলেও তাঁরা লাগাতার স্লোগান দিয়ে যাচ্ছিলেন। কেবল নারীরাই নয়, মিছিলে ছিলেন পুরুষরাও।
আসলে গত কয়েক মাস ধরেই ইরানের মানবাধিকার কর্মীরা মহিলাদের উদ্দেশে আরজি জানাচ্ছিলেন, হিজাব খুলে ফেলতে। সেদেশে হিজাব ছাড়া রাস্তায় বেরনো দণ্ডনীয় অপরাধ। তবু বহু মহিলাকেই দেখা গিয়েছে হিজাব খুলে ফেলতে। তাঁদের বিরুদ্ধেও নীতীপুলিশরা কঠোর পদক্ষেপ করেছেন। অবশেষে শনিবার ফের হিজাব না পরায় তরুণীর মৃত্যুকে ঘিরে সেই আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করল।