সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ ক্রমশ ভয়ংকর আকার ধারণ করছে। দু'পক্ষই লাগামছাড়া আক্রমণ চালাচ্ছে। ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ইজরায়েলের দক্ষিণ প্রান্তে বের-শেভা শহরে একটি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে ফের ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালানোর অভিযোগ ইজরায়েলের বিরুদ্ধে!
পরোক্ষে ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে আমেরিকাও। গতকালই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আগামী সপ্তাহেই ইরান-ইজরায়েল সংঘাতের এসপার-ওসপার হয়ে যাবে। কার্যত যুদ্ধের ‘ডেডলাইন’ দেন তিনি। ধমকির সুরে ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা আলি খামেনেইয়ের প্রতি ট্রাম্পের বার্তা---“গুড লাক।” এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার যুদ্ধের তীব্রতা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে ইরানি বাহিনী। জেনেভা কনভেনশানের পরোয়া না করে ইহুদি দেশটির দক্ষিণ প্রান্তে বের-শেভা শহরে একটি হাসপাতালে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও হাসপাতালের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি এখনও অস্পষ্ট। এখন রোগীদের ওই হাসপাতালে না আসার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, হাসপাতালের পাশেই রয়েছে একটি সামরিক গোয়েন্দা দপ্তর। সেটিকেই নিশানা করেছিল তেহরান। হাসপাতালে সামান্যই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এলাকায় হামলা হতে পারে এই আশঙ্কায় গতকালই হাসপাতালটি ফাঁকা করা শুরু হয়। এই কারণেই ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
এদিকে ইরানের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে ফের হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে। ইরানেরে সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ জানিয়েছে, খোনদাব শহরে ভারী জলের গবেষণাকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলের সেনা। বস্তুত, এই ভারী জল পরমাণু রিঅ্যাক্টরকে শীতল রাখতে ব্যবহার করা হয়। যদিও ইরানের দাবি, হামলার আগেই ওই কেন্দ্রটিকে ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছিল। ফলে সেখান থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ছড়ানোর আশঙ্কা নেই।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ইরানের সামরিক ঘাঁটি এবং পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার লক্ষ্য করে আকাশপথে হামলা চালানো হয় ইজরায়েলের তরফে। এই হামলার জেরে মৃত্যু হয়েছে ইরান সেনার চিফ অফ স্টাফ মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের কমান্ডার হোসেন সালামি, ইরানের এমার্জেন্সি কমান্ডের কমান্ডার এবং দুই শীর্ষ সেনা আধিকারিকের। পাশাপাশি ৯ জন পরমাণু বিজ্ঞানীকে নিখুঁত পরিকল্পনায় হত্যা করে ইজরায়েল। এই ঘটনার পর ফের মধ্যপ্রাচ্যে বেজে উঠেছে যুদ্ধের দামামা। ইজরায়েলের দাবি, ইরান পরমাণু বোমার খুব কাছে ছিল। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করতেই এই হামলা চালানো হয়েছে। বুধবারের তথ্য অনুযায়ী, ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধে মৃত ৬০০-র বেশি। এর মধ্যে ইরানেই মৃত্যু হয়েছে ৫৮৫ জনের।
