সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের অশান্ত পাকিস্তান। আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে পুলিশের গাড়িতে হামলা। নিহত চার পুলিশকর্মী। যদিও, এই ঘটনার দায় নেয়নি কোনও জঙ্গিগোষ্ঠী।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে জঙ্গিরা একটি পুলিশের গাড়িতে হামলা করে। গুলি চালিয়ে চার পুলিশকর্মীকয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় তারা। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সাম্প্রতিক অতীতে হিংসার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ প্রধান নূর ওয়ালি বলেন, খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কারাক জেলায় তেল ও গ্যাস উত্তোলন ক্ষেত্রের কাছে পুলিশি টহলের সময় এই ঘটনা ঘটেছে। এরপরেই বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকাটি ঘিরে ফেলে। আক্রমণকারীদের খুঁজে বের করার জন্য তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি এবং খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী সুহেল আফ্রিদি এই হামলার নিন্দা করেছেন। পৃথক বিবৃতিতে তারা বলেছেন হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। নিহত পুলিশকর্মীদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান দু'জনেই।
এই ঘটনাকে জঙ্গি হামলা বলা হলেও এখনও কোনও জঙ্গিগোষ্ঠী এর দায় স্বীকার করেনি। তবে সন্দেহের তির পাকিস্তানি তালিবান অর্থাৎ টিটিপি-র দিকে। টিটিপি-র সঙ্গে আফগানিস্তানের শাসক তালিবান সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। যদিও, পাক সরকার এর আগেও দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন হামলার জন্য টিটিপিকে দায়ি করেছে।
পাকিস্তানে জঙ্গি হামলা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ। এরফলে আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়েছে শেহবাজ শরিফ সরকারের। ২০২১ সালে তালিবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে ইসলামাবাদ টানা টিটিপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে অবাধে নিজেদের সন্ত্রাসবাদী করমকান্ড পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ তাদের। যদিও, কাবুল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে মার্কিন সেনাকে তাড়ানোর পর আফগানিস্তানের শাসনভার উঠেছে তালিবানের হাতে। এদিকে পাকিস্তানের আশা ছিল আফগানিস্তানে তালিবান ক্ষমতায় এলে পাকিস্তানকে সমর্থন করবে তারা। পাকিস্তানের মাটিতে থাকা সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘরগুলি আফগানিস্তান থেকে পরিচালনা করা যাবে। সেখানকার সশস্ত্র সংগঠনগুলিকে ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে। যদিও বাস্তবে তা হয়নি। বরং অতীতের মতো ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রেখেছে তালিবান। তাতেই ক্ষেপে উঠেছে পাকিস্তান।
এদিকে পাকিস্তানের তেহরিক-ই-তালিবান, বালোচ লিবারেশন আর্মির মতো স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলি পাক সেনার অত্যাচারের পালটা জবাব দিতে শুরু করেছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগানিস্তান থেকে জঙ্গিরা এসে পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। জঙ্গিদমনের নামে আফগানিস্তানের কাবুলে সম্প্রতি এয়ারস্ট্রাইক চালিয়েছিল পাক সেনা। যার পালটা জবাব দেয় আফগানিস্তানও। দু'পক্ষের লড়াইয়ে শতাধিক মৃত্যুর খবর পর। দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল। তারইমাঝে ফের পাক সেনার উপর চলে আত্মঘাতী হামলা।
