সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে অধীশ্বর হওয়ার পরই ডেনমার্কের কাছ থেকে গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার বিষয়টি নিয়ে ফের মুখ খুললেন তিনি। সাফ জানিয়ে দিলেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চায় আমেরিকা। পাশাপাশি, লুইজিয়ানার গভর্নর জেফ ল্যান্ড্রিকে আর্কটিক অঞ্চলের (গ্রিনল্যান্ড যেখানকার অংশ) আমেরিকার বিশেষ দূত হিসাবেও নিয়োগ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ফ্লোরিডায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তার স্বর্থের গ্রিনল্যান্ডকে চায় আমেরিকা। খনিজ পদার্থের জন্য নয়। গ্রিনল্যান্ড উপকূলের আশপাশে বহু রুশ এবং চিনা জাহাজ রয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করা প্রয়োজনীয়।” তারপরই আর্কটিক অঞ্চলে আমেরিকার বিশেষ দূত নিয়োগ করেন তিনি। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রিনল্যান্ড। ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন এবং গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেনস-ফ্রেডেরিক নিলসেন একটি যৌথ বিবৃতি দেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে কটাক্ষ করে তাঁরা বলেন, “গ্রিনল্যান্ডের সঙ্গে আপনি অন্য কোনও দেশকে সংযুক্ত করতে পারবেন না। আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আশঙ্কা থাকলেও নয়। গ্রিনল্যান্ড গ্রিনল্যান্ডবাসীর। আমেরিকা কোনওদিন গ্রিনল্যান্ড দখল করতে পারবে না।”
উল্লেখ্য, ১৮৬৭ সালের পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার গ্রিনল্যান্ড কেনার চেষ্টা করেছে বা বিষয়টি বিবেচনা করেছে। গ্রিনল্যান্ড উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অংশ, তবে এর ইউরোপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভূরাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এবং এটি ডেনমার্কের মাধ্যমে ইইউ ব্লকের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি ওভারসিজ টেরিটরি হিসেবে ইউরোপীয় তহবিল পেয়ে থাকে।
কেন গ্রিনল্যান্ড কিনতে এত মরিয়া আমেরিকা? ট্রাম্প জানিয়েছেন, জাতীয় প্রতিরক্ষার কারণেই মূলত গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণ করতে চান তিনি। এবং এর ফলে গ্রিনল্যান্ডে রাশিয়া ও চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবও অস্তমিত হবে। আসলে গ্রিনল্যান্ডে প্রচুর ধাতু রয়েছে, যা প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা খাতে জরুরি উপাদান। এর মধ্যে মোবাইল, ইলেকট্রিক গাড়ি, অস্ত্রশস্ত্রে ব্যবহৃত হওয়া বিরল ধাতুও রয়েছে। চিন যেখানে এই ধরনের ধাতুর ভাণ্ডার হওয়ায় আধিপত্য জারি করে রেখেছে, সেখানে গ্রিনল্যান্ড হাতে পেলে আমেরিকার প্রভাব আরও বাড়বে। এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গ্রিনল্যান্ডের সম্পদের মূল্য ১.১ ট্রিলিয়ন ডলার হতে পারে।
প্রসঙ্গত, এর আগে কানাডার ভূখণ্ড দখল করে তা আমেরিকার ৫১তম প্রদেশ হিসাবে গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেই তালিকায় এবার জুড়েছে গ্রিনল্যান্ড ও পানামাও।
