সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলি খামেনেইকে (Ayatollah Ali Khamenei) হত্যার ছক কষেছিল ইজরায়েল। যদিও শেষ মুহূর্তে তাদের সে পরিকল্পনায় বাদ সাধে আমেরিকা। ট্রাম্পের আপত্তিতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যার রাস্তা থেকে পিছিয়ে আসেন নেতানিয়াহু। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছেন দুই শীর্ষ মার্কিন আধিকারিক।
রয়টর্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই দুই মার্কিন আধিকারিক জানান, ইজরায়েলের তরফে আমেরিকাকে জানানো হয়েছিল ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যার সুযোগ রয়েছে তাদের কাছে। তবে ইজরায়েলের এই প্রস্তাবে পালটা আমেরিকার তরফে জানানো হয়, ''এখনও পর্যন্ত কি কোনও আমেরিকানকে হত্যা করেছে ইরানিরা? করেনি। ফলে যতক্ষণ তারা এমন কোনও পদক্ষেপ করছে আমরা তাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করার বিষয়টি আলোচনার টেবিলে রাখতেই রাখছি না।" যদিও এই বার্তা খোদ ডোনাল্ড ট্রাম্প দিয়েছিলেন কিনা সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছু জানাননি ওই আধিকারিকরা।
তবে খামেনেইকে রেহাই দিলেও ইরানের মাটিতে হামলার ঝাঁজ ব্যাপক বাড়িয়েছে ইজরায়েল। বিরাট বিরাট বিস্ফোরণের জেরে ইরানের ফোর্ডো পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রের কাছে ভূমিকম্পের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রিখটার স্কেলে এই কম্পনের তীব্রতা ছিল ২.৫। ইরানও ইজরায়েলের (Israel Iran Conflict) উপর লাগাতার হামলা চালাতে শুরু করেছে। এরইমাঝে সূত্রের খবর, ইজরায়েলের হাত থেকে রক্ষা পেতে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলি খামেনেই বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন। ইরান ইন্টারন্যাশনাল-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, খামেনেইকে তেহরানের একটি ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে পাঠানো হয়েছে। যেখানে খামেনেই-এর পাশাপাশি রয়েছেন তাঁর গোটা পরিবার। খামেনেই-এর পুত্র মোজতবা যাকে তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে দেখাও তিনিও রয়েছেন এই বাঙ্কারে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ইরানের সামরিক ঘাঁটি এবং পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার লক্ষ্য করে আকাশপথে হামলা চালানো হয় ইজরায়েলের তরফে। তার জেরে মৃত্যু হয়েছে ইরান সেনার চিফ অফ স্টাফ মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের কমান্ডার হোসেন সালামি, ইরানের এমার্জেন্সি কমান্ডের কমান্ডার এবং দুই শীর্ষ সেনা আধিকারিকের। প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আলি শামখানিরও। এছাড়াও ৯ পারমাণু বিজ্ঞানীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে ইজরায়েল। ইজরায়েলের অপারেশন ‘রাইজিং লায়ন’-এর পালটা ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস ৩’ শুরু করেছে ইরান। দুই তরফের এই যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। শুক্রবারের পর শনি-রবিবারও একের অপরের উদ্দেশে বেলাগাম ড্রোন ও মিসাইল ছুড়েছে দুই দেশ।
