সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কানাডায় ফেডারেল নির্বাচনে বড় ধাক্কা খেয়েছে নিউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি তথা এনডিপি। হারতে হয়েছে দলের 'মুখ' খলিস্তানপন্থী নেতা জগমিত সিংকেও। দলের হার ও ব্যক্তিগত পরাজয়ের ধাক্কা সামলাতে না পেরে এর মধ্যেই ইস্তফার ঘোষণা করেছেন তিনি। এই পরাজয়কে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তাদের মতে, এর ফলে ভারত ও কানাডার কূটনৈতিক সম্পর্ক ফের ভালো জায়গায় পৌঁছবে।
কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বারবার ভারত বিদ্বেষী মনোভাবের প্রমাণ দিয়েছেন। তাঁর জমানাতেই খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের খুন নিয়ে তলানিতে ঠেকেছে ভারত-কানাডা সম্পর্ক। তবে এখন পরিস্থিতি বদলেছে। মসনদ খুইয়েছেন ট্রুডো। তাঁর উত্তরসূরি মার্ক কারনি সেই পথে হাঁটতে নারাজ। বরং হারান সম্পর্ক পুনরুদ্ধারেই সচেষ্ট তিনি। কানাডার মসনদে বসেই কারনি বলেছেন, “আমি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে চাই। বাণিজ্যিক সম্পর্কে কানাডা বৈচিত্র চায়। তাই আমি সমমনস্ক দেশগুলোর সহযোগিতা চাই। এক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গেও সুসম্পর্ক তৈরি করার সুযোগ রয়েছে আমাদের কাছে।” এই পরিস্থিতিতে জগমিত সিংয়ের মতো খলিস্তানি নেতার পরাজয় দুই দেশের সম্পর্কের মেঘকে দূর করতে আরও বেশি সাহায্য করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
কে এই জগমিত সিং? হরদীপ সিং নিজ্জরের খুনে ভারতের জড়িত থাকা অভিযোগ তিনি বহুবার করেছেন। এবং সেটা করেছেন কোনও প্রমাণ ছাড়াই। এই জগমিতই কিন্তু প্রথম অশ্বেতাঙ্গ নেতা যিনি ফেডেরাল দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এবং পার্লামেন্টে গদির খেলার গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ও হয়ে উঠেছিলেন। আসলে ২০২১ সালের নির্বাচনে ট্রুডোর দল পেয়েছিল ১৫৭ আসন। অথচ ১৭০ আসন না হলে ট্রুডোর প্রধানমন্ত্রীর মসনদ অধরাই থেকে যাবে। এই পরিস্থিতিতে জগমিত, যাঁর দলের হাতে ছিল ২৫ আসন এগিয়ে আসেন ট্রুডোর হাত ধরতে। আর সেই কারণেই ট্রুডো প্রশাসনের উপরে তাঁর প্রভাব বছিল ব্যাপক। ট্রুডো হেরেছেন। এবার জগমিতও গোহারা হেরেছেন। ৩৪৩টির মধ্যে মাত্র ৮টি আসন দখল করেছে তাঁর দল এনডিপি। মনে করা হচ্ছে, অন্তত এই মুহূর্তে যে পরিস্থিতি তৈরি হল তাতে আগের তিক্ততাকে দূরে সরিয়ে রেখে ভারত ও কানাডার কাছাকাছি আসার আবহই তৈরি হল জগমিতের পরাজয়ে।
