সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজের হাতেই নিজেদের বিপদ ডেকে এনেছিলেন মাইক্রোসফট সংস্থার তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা! নইলে যে কৃত্রিম মেধা ব্যবস্থা তৈরি করেছিলেন, তা কার্যকর হতেই কর্মহীন হলেন কেন তাঁরা? মাইক্রোসফটের এক ভিপি জেফ হালসের অধীনে ৪০০ ইঞ্জিনিয়ার কাজ করেছেন। তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সংস্থার তরফে যাতে ওপেন এআইয়ের চ্যাটবটের সাহায্যে ৫০ শতাংশ কোড জেনারেট করেন। এর ফলে স্বাভাবিকভাবে আগে যে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কাজে এআই ব্যবহার করা হত তার পরিমাণ এখন অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আর কয়েক সপ্তাহ আগেই সেই ভিপি ও তাঁর টিমের কাজ চলে গিয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে যে এই সমস্ত ইঞ্জিনিয়াররা নিজেরাই নিজেদের বিকল্প তৈরি করেছিলেন কি না।
মাইক্রোসফটের লক্ষ্য এখন বদলে গিয়েছে এআই-চালিত কোডিংয়ের দিকে। একটি সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী এই টেক জায়ান্ট বিশ্বজুড়ে ৬ হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। ব্লুমবার্গের তথ্য এমনটাই বলছে। অনেকেই মাসের পর মাস কাজ করেছেন এআই টুলসকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করে তোলার জন্য। তার ফলে যে প্রযুক্তি তাঁরা তৈরি করলেন, সেই প্রযুক্তির কারণেই তাঁদের কাজ থেকে ছাঁটাই হতে হল। ২০২৫ সালেও আইটি সংস্থাগুলিতে সমানে ছাঁটাই চলছে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, রাজস্ব বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় মাইক্রোসফট, গুগল, অ্যামাজন এবং ক্রাউডস্ট্রাইকের মতো নামীদামি আইটি সংস্থাগুলো হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই করছে।
২০২৫ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ১৩০টিরও বেশি আইটি কোম্পানি মোট ৬১,০০০-এর বেশি কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। একা মাইক্রোসফটই ৬,০০০ কর্মীকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করেছে। ২০২৩ সালের পর প্রথমবার এত সংখ্যক কর্মীকে ছাঁটাই করেছে এই সংস্থা। গুগলের তরফে ২০২৫ সালজুড়ে ধাপে ধাপে কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই গুগলের গ্লোবাল বিজনেস অর্গানাইজেশন বিভাগের তরফে মে মাসের শুরুতে ২০০ জন কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে।
এমনকী এর আগে পিক্সেল, অ্যান্ড্রয়েড, ক্রোম এবং ক্লাউড থেকেও ছাঁটাই করা হয়েছে কর্মীদের। অ্যামাজনেও ধাপে ধাপে চলেছে ছাঁটাই প্রক্রিয়া। তবে কত সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই হয়েছেন সেই সংখ্যাটি এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। প্রাথমিক অনুমান, হাজারেরও বেশি কর্মী কমানোর পরিকল্পনা করেছে এই সংস্থা। সাইবার সিকিউরিটি সংস্থা ক্রাউডস্ট্রাইক গত সপ্তাহে গ্লোবাল ওয়ার্কফোর্সের ৫ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করেছে।