সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদে বসেই 'অ্যাকশন মুডে' ডোনাল্ড ট্রাম্প। এশিয়ায় বাড়তে থাকা চিনা আগ্রাসন রুখতে পরিকল্পনা শুরু করে দিলেন তিনি! আন্তর্জাতিক মহলে এই জল্পনা চরম আকার নিয়েছে কারণ, রিপাবলিকান পার্টির সদস্য মাইক ওয়াল্টজকে আমেরিকার নিরাপত্তা পরিষদের প্রধানের দায়িত্ব দিয়েছেন ট্রাম্প। যিনি চিনের কট্টর সমালোচক বলে পরিচিত।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশ্বস্ত ওয়াল্টজ দীর্ঘ বছর আমেরিকার ন্যাশনাল গার্ডের কর্নেলের দায়িত্ব সামলেছেন। এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের গতিবিধির তীব্র বিরোধিতা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। শুধু তাই নয়, এই অঞ্চলে সম্ভাব্য যুদ্ধের জন্য দেশকে প্রস্তুত থাকারও পরামর্শ দিয়েছিলেন। ওয়াল্টজ রিপাবলিকানে চিন টাস্ক ফোর্সের দায়িত্বে ছিলেন। সেখানে থাকাকালিন তিনি জানিয়েছিলেন যদি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কোনও যুদ্ধ হয়, তবে তার জন্য মার্কিন সেনা অতটাও প্রস্তুত নয়, যতখানি হওয়া প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, চলতি বছরে তাঁর বই 'হার্ড ট্রুথ'-এ চিনের সঙ্গে আমেরিকার সম্ভাব্য যুদ্ধ এড়াতে পাঁচ রণনীতি বাতলে দিয়েছিলেন ওয়াল্টজ। যেখানে উল্লেখযোগ্য ছিল, তাইওয়ানকে যথেষ্ট পরিমাণ অস্ত্রের যোগান, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের সঙ্গে বিবাদ রয়েছে এমন সব দেশের পাশে দাঁড়ানো এবং মার্কিন যুদ্ধ জাহাজ ও বিমানের আধুনিকরণ। কট্টর চিন সমালোচক ওয়াল্টজকে মার্কিন নিরাপত্তা পরিষদের দায়িত্বে আনা আসলে ট্রাম্পের তরফে চিনকে বার্তা হিসেবে দেখছে কূটনৈতিক মহল।
তবে ওয়াল্টজ চিনের জন্য অশনি সংকেত হলেও ভারতের জন্য যথেষ্ট ভাল খবর হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ মাইক ওয়াল্টজ ইন্ডিয়া ককাসের প্রধান। ইন্ডিয়া ককাস মার্কিন সেনেটের অংশ। এটি ২০০৪ সালে সেনেটর কর্নিন এবং তৎকালীন সেনেটর হিলারি ক্লিনটন দ্বারা গঠিত হয়েছিল। যার উদ্দেশ্য ছিল ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি এবং দুই দেশের স্বার্থ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা। ফলে শুরু থেকেই ভারত প্রসঙ্গে নরম মনোভাব রয়েছে ওয়াল্টজের।
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে দক্ষিণ চিন সাগরে চোখ রাঙাচ্ছে বেজিং। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কৃত্রিম দ্বীপে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে লাল ফৌজ। ফলে বিপন্ন ‘ওপেন ট্রেড রুট’ বা মুক্ত বাণিজ্যপথ। অন্যদিকে, গত কয়েকমাস ধরে তাইওয়ান সীমান্তে সামরিক মহড়া তীব্র করেছে লাল ফৌজ। যা নিয়ে আমেরিকা ও চিনের মধ্যে সংঘাত তীব্র হচ্ছে। তাই কমিউনিস্ট দেশটির গা জোয়ারি রুখতে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নয়া কৌশল নিয়েছে ওয়াশিংটন। বাইডেন সরকারের আমলে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনের নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে স্কোয়াড। এবার ট্রাম্পের আমলে চিন-মার্কিন আরও চরম আকার নিতে পারে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।