সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একগাদা কাগজপত্র, গবেষণার রিপোর্ট নিয়ে সম্মেলনে হাজিরা হওয়া, আলোচনার টেবিলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথাবার্তা, মাথা চুলকে সমাধানের রাস্তা খোঁজা, একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি, পরের বছর আবার সেই একই ছবির পুনরাবৃত্তি। বিশ্বের বড় বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এমনটাই হয়ে থাকে। প্রতিশ্রুতি থাকে ঢালাও, তবে বাস্তবায়িত হয় যৎসামান্য। কিন্তু ২০২১এর রোমে (Rome) আয়োজিত G-20 সম্মেলনে দেখা গেল সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বিশ্বের আসন্ন বিপদ টের পেলেও কোনও প্রতিশ্রুতির পথেই হাঁটলেন না বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রপ্রধানরা। কোনও যৌথ পরিকল্পনা ছাড়াই রবিবার রোমে শেষ হয়ে গেল জি-২০ সম্মেলন। তারপর প্রায় সকলেই উড়ে গেলেন গ্লাসগোয়, আরেক পরিবেশ সম্মেলনে (COP-26) যোগ দিতে।
আলোচনা চলছিল, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বকে কার্বন নিঃসরণ (Carbon emission) শূন্য করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে। নানা মুনির নানা মত। কেউ বলছেন, ২০৫০ নয়, ২০৬০। কারও আবার মত, ২০৫০ অনেকটা দেরি। তার আগেই কার্বনমুক্ত করতে হবে বিশ্বকে। এ নিয়ে ৩০ এবং ৩১ তারিখ দফায় দফায় বক্তব্য রেখেছেন সকলে। নিজের দেশের পরিবেশ সুরক্ষা, পদক্ষেপ নিয়ে ভাষণ দিয়েছেন মোদিও (Narendra Modi)। তিনিই বরং এ বিষয়ে অনেকটা এগিয়ে। কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে, পরিবেশবান্ধব শক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে কীভাবে ভারত পরিবেশ রক্ষার পথে হাঁটছে, তা বিশদে ব্যাখ্যা করেন মোদি।
[আরও পড়ুন: বিশ্বকে টিকা সরবরাহের আশ্বাস দিয়ে জি২০ সম্মেলনে কোভ্যাক্সিনের ছাড়পত্রের জন্য চাপ মোদির]
পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বে ৮০ শতাংশ কার্বন নিঃসরণকারী রাষ্ট্রের তালিকায় সবার উপরে চিন, ব্রাজিল। তার পরে রয়েছে ভারত, জার্মানি, আমেরিকা। চিনের দাবি, ২০৬০সালের মধ্যে তারা নিজেদের দেশে পরিবেশরক্ষায় বড় পদক্ষেপ নিতে পারবে। তবে আগামী কয়েকবছরের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বাড়তে দেওয়া যাবে না, তা নিয়ে একমত হয়েছেন সকলে। কিন্তু কীভাবে তা সম্ভব, সে বিষয়ে কেউ কোনও দিশা দিতে পারেননি। অথবা শক্তপোক্ত ভাবনা ভাবতে রাজি হননি। ফলে এবারের জি-২০ সম্মেলন কার্যত প্রতিশ্রুতিহীন, চ্যালেঞ্জহীন।
[আরও পড়ুন: মৃত্যুর গুজব উড়িয়ে অবশেষে জনসমক্ষে তালিবানের সুপ্রিম লিডার আখুন্দজাদা]
রবিবার রোম থেকে অনেকেই সরাসরি উড়ে গিয়েছেন গ্লাসগোয়। গিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। সেখানে আবার COP-26 শীর্ষক পরিবেশ সম্মেলন রয়েছে। উদ্যোক্তা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। অথচ পরিবেশ রক্ষায় জনসন প্রশাসনেরও খুব একটা সুনাম নেই। তাই গ্লাসগো সম্মেলনে আয়োজক দেশ ঠিক কী দিশা দেখাবে, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই।