সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চাইছে পাকিস্তান! পহেলগাঁও হামলা (Pahalgam Terror Attack) এবং ভারত-পাক টানাপোড়েনের আবহে প্রথমবার মুখ খুলেই বিস্ফোরক ইঙ্গিত দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif)। তিনি বলছেন, "পহেলগাও নিয়ে যদি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ্ব কোনও তদন্ত হয়, তাহলে পাকিস্তানের আপত্তি নেই। কিন্তু ভারত বাড়াবাড়ি করলে আমরাও চুপ করে থাকব না।"
বস্তুত, পহেলগাঁও হামলা যে পাক মদত এবং প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতাতেই ঘটেছে সেটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। কিন্তু পাকিস্তান সরকার বরাবরের মতো সেটা অস্বীকার করে আসছে। পাক সরকারের দাবি, এই হামলায় তাঁদের কোনও যোগ নেই। এমনকী পাকিস্তানে লস্করও নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে বলে দাবি ইসলামাবাদের। পাকিস্তানের বক্তব্য, নয়াদিল্লি যে দাবি করছে এই হামলার নেপথ্যে পাকিস্তান, সেটার প্রমাণ পেশ করুক। বস্তুত পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা মহম্মদ আসিফ আগেই বলেছেন, "ভারত সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে এবং নিজেদের গোয়েন্দা ব্যর্থতা ঢাকতে পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে। ওরা কোনও প্রমাণ, কোনও তদন্ত ছাড়াই আমাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে। আমরা এ বিষয়ে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্ত চাই।"
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মুখেও সেই সূরই কার্যত প্রতিধ্বনিত হল। শরিফ বললেন, "আমরা যুদ্ধ চাই না। শান্তিরক্ষাকেই প্রাধান্য দিতে চাই। পহেলগাঁও নিয়ে যদি কোনও নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ্ব তদন্ত হয়, তাহলে আমরা সেটাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।" একই সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, "শান্তি চাওয়া মানে এই নয় যে আমাদের সংহতি এবং সুরক্ষায় আঘাত করলে আমরা চুপ থাকব।" আসলে পাকিস্তান বারবার অভিযোগ করছে, পহেলগাঁও হামলাকে হাতিয়ার করে দক্ষিণ এশিয়ায় অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে ভারত। শরিফের কথাতেও তেমনই ইঙ্গিত মিলল।
কিন্তু পাক প্রধানমন্ত্রী যেভাবে পহেলগাঁও নিয়ে স্বচ্ছ এবং 'নিরপেক্ষ' তদন্ত চাইলেন, তাতে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। তাহলে কি ভারতের উপর পালটা চাপ বাড়াতে চায় ইসলামাবাদ? আমেরিকা-চিনের মতো শক্তিগুলোকেও জড়াতে চায় তারা? নাকি মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির সাহায্য প্রত্যাশা করছে পাক সরকার? উল্লেখ্য, শিমলা চুক্তি অনুযায়ী ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে তৃতীয় কোনও শক্তির হস্তক্ষেপ করার কথা নয়। কিন্তু পাকিস্তান সেই শিমলা চুক্তি অমান্য করার কথা আগেই ঘোষণা করে দিয়েছে।
