সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে বালোচ বিদ্রোহীদের মারে নাজেহাল, অন্যদিকে অফগানিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের মাঝেই চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তেহরিক-ই-তালিবান। গুরুতর এই পরিস্থিতির মাঝে কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস বন্ধ করে দিল পাকিস্তান রেলওয়ে। নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে আপাতত ৪ দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে বালোচিস্তানের সঙ্গে সংযোগরক্ষাকারী এই ট্রেন।
চলতি বছরে দফায় দফায় জাফার এক্সপ্রেসে হামলা চালিয়েছে বালোচ বিদ্রোহীরা। গত আগস্ট মাসে ৫ বার হামলা হয় এই যাত্রীবাহী ট্রেনে। এই পরিস্থিতির মাঝে পাক রেলের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, যাত্রী, রেলকর্মী, নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বিভাগ ও গোয়েন্দাদের পরামর্শমতো আগামী ৯ থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত জাফর এক্সপ্রেসের পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে। রেল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে যারপরনাই ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। তাদের অভিযোগ, দুই শহরের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষাকারী এটাই একমাত্র ট্রেন তা বন্ধ করায় হাজার হাজার যাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে পাক সরকার এই ট্রেন পরিষেবার নিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায়। গত মার্চ মাসে বালোচিস্তানের বোলানে জাফার এক্সপ্রেস অপহরণ করেছিল বালোচ বিদ্রোহীরা। দীর্ঘ অভিযানের পর পাক সেনার তরফে দাবি করা হয় সব বিদ্রোহীদের হত্যা করে অপহৃতদের উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও পালটা বিদ্রোহীদের তরফে জানানো হয়, ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা পার হওয়ার পর ২১৪ জন পণবন্দিকে হত্যা করা হয়েছে। এরা সকলেই পাক সেনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এরপর গত ১০ আগস্ট ফের হামলার শিকার হয়েছিল জাফার এক্সপ্রেস। সেবার ট্রেনের ৫টি কামরা লাইনচ্যুত হয়।
এদিকে কূটনৈতিক মহলের দাবি, আপাতত ৪ দিনের জন্য পরিষেবা বন্ধ করলেও ১২ নভেম্বরের পর তা চালু হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট কম। শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর ডুরান্ড লাইনকে কেন্দ্র করে বর্তমানে আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সংঘাত চরম আকার নিয়েছে। বালোচ বিদ্রোহীরা পাক সেনার উপর আবারও জোরালো আঘাত হানার সুযোগ খুঁজছে। সেখানে বালোচিস্তানের মধ্য দিয়ে চলা এই ট্রেন তাদের কাছে সফট টার্গেট। অন্যদিকে, তেহরিক-ই-তালিবান লাগাতার হামলা চালাচ্ছে পাক সেনার উপর। গুরুতর সেই পরিস্থিতিতে জাফর এক্সপ্রেস বন্ধ করার সিদ্ধান্তে এটাই স্পষ্ট হয় যে বিদ্রোহীদের আতঙ্কে কাঁটা ইসলামাবাদ।
