সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাঝ আকাশে বিমান দুর্ঘটনা (Flight accident) নতুন কিছু নয়। যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিমান ভেঙে পড়া কিংবা পাখির ডানায় ধাক্কা লেগে দিকভ্রান্ত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেই থাকে। কিন্তু মায়ানামারে (Myanmar)মাঝ আকাশে যা ঘটল, তা বেশ অস্বাভাবিক। ঠিক যেন স্থলভূমিতে যুদ্ধ হচ্ছে। বিমানের লৌহকঠিন শরীরে ভেদ করে গুলি (Bullet) ঢুকে গেল ভিতরে, তাতে আহত হলেন এক যাত্রী। তড়িঘড়ি বিমানটিকে লইকো বিমানবন্দরে অবতরণের পর আহত যাত্রীকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। এই দুর্ঘটনার জেরে রবিবার লইকো থেকে সমস্ত বিমান বাতিল করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কে বা কারা এভাবে গুলি ছুঁড়ল? মায়ানমারের সেনাশাসকের দাবি, বিদ্রোহীদের কাজ এটা। বিদ্রোহীরা ঘটনার দায় অস্বীকার করেছে।
জানা গিয়েছে, লইকো (Loikaw) বিমানবন্দরের উত্তর দিক বরাবর মাটি থেকে প্রায় ৩৫০০ ফুট উঁচু দিয়ে উড়ছিল যাত্রীবাহী বিমান। আচমকাই বিমানের দেওয়াল ফুঁড়ে ভিতরে ঢুকে যায় একটি গুলি। জানলার পাশের আসনে বসে থাকা এক যাত্রীর গায়ের তা লাগে। তিনি রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়েন। এহেন কাণ্ড দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বিমানের অন্যান্য যাত্রীরা। বিমানটিকে ফেরত আনা হয় লইকো বিমানবন্দরে। আহত যাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
[আরও পড়ুন: ‘মোটা’, ‘তোতলা’ বলে লাগাতার কটাক্ষ, বাবা স্কুলে অভিযোগ জানাতে যেতেই সহপাঠীদের হাতে খুন ছাত্র]
হঠাৎ মাঝ আকাশে বিমান লক্ষ্য করে কারা ছুঁড়ল গুলি? মায়ানমারের সেনা প্রশাসনের তরফে মেজর জেনারেল জ মিন তুন বলেন, এই কাণ্ড ঘটিয়েছে কারেনি ন্যাশনাল প্রগ্রেসিভ পার্টি অর্থাৎ বিদ্রোহীরা। এরা সেখানকার আদি সংখ্যালঘু, যারা সেনা শাসকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন লড়াই চালাচ্ছে। মেজর জেনারেলের কথায়, “বিমানের সাধারণ যাত্রীদের উপর এ ধরনের আক্রমণ অপরাধ। যারা শান্তির পক্ষে, সকলেই এই ঘটনার প্রতিবাদ করুন।” যদিও বিদ্রোহীরা এই হামলার কথা অস্বীকার করেছে।
[আরও পড়ুন: প্রথম দেবী দর্শন, কলেজ পড়ুয়াদের উদ্যোগে ‘দুগ্গা’ ঠাকুর দেখল অনাথ শিশুরা]
২০২১ সালে মায়ানমারে গণতান্ত্রিক সু কি সরকারের পতনের পর দেশের ক্ষমতা দখল করে সেনা অর্থাৎ জুন্টা সরকার। সেই থেকে সেনা শাসকের বিরোধিতায় নেমেছে কারেনি ন্যাশনাল প্রগ্রেসিভ পার্টি। তাদের গোলাগুলিতে মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশ সীমান্তের ভূখণ্ডেও এসে পড়ছে। এদিন বিমানের দেওয়াল ফুঁড়ে গুলি ঢুকে পড়া তেমনই একটি নিদর্শন বলে মনে করা হচ্ছে।