সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বোয়িং ৭৪৭ বিমান উপহার দিতে চায় কাতারের শাহী পরিবার। ৪০০ মিলিয়ন ডলারের (৩৩০০ কোটি টাকার) এই বিলাসবহুল বিমানকে 'এয়ারফোর্স ওয়ান' হিসেবে ব্যবহার করতে চান ট্রাম্প। তবে বহুমূল্য এই উপহারে চরম বিতর্ক শুরু হয়েছে মার্কিন রাজনীতিতে। তবে সে সব বিতর্কে কান দিতে একেবারেই নারাজ ট্রাম্প। বরং বিরোধী শিবিরের কটাক্ষকে ফুঁৎকারে উড়িয়ে হোয়াইট হাউসের কর্তা জানালেন, 'বিনামূল্যে পাওয়া এই উপহারে না বলার মতো বোকা আমি নই।'
মার্কিন আইন অনুযায়ী, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত কোনও ব্যক্তি মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া কোনও রাজা বা বিদেশি রাষ্ট্রের থেকে বহুমূল্য উপহার নিতে পারবেন না। সেই নিয়ম অনুযায়ী, ১৮৩৯ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট মার্টিন ভ্যান বুরেন মরক্কো ও ওমানের সুলতানদের কাছ থেকে সিংহ, ঘোড়া-সহ বহুমূল্য সব উপহার পান। তবে তা তিনি ব্যক্তিগতভাবে গ্রহণ করতে পারেননি। ফলে সিংহ যায় চিড়িয়াখানায় ও বহুমূল্য উপহার যায় যাদুঘরে। কার্যত তখন থেকেই বহুমূল্য উপহার রীতি কার্যত বন্ধ হোয়াইট হাউসে। এই অবস্থায় উপহারে পাওয়া ট্রাম্পের এই বিলাসবহুল বিমান নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের পাশাপাশি প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে ট্রাম্পের নিজের দল রিপাবলিকান পার্টিও।
রাজনৈতিক দিক তো বতেই উপহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ গ্যারেট গ্রাফ। তিনি বলেন, দেশের রাষ্ট্রপতির এভাবে বিদেশি বিমান উপহার হিসেবে নেওয়া একেবারেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়, বরং তা বিপজ্জনক। ওই বিমান দীর্ঘদিন ধরে কাতার সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ফলে সাইবার নিরাপত্তা ও গুপ্তচরবৃত্তির ঝুঁকি এড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে এসবে কান দিতে একেবারেই নারাজ ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্য, বিমানটি যদি দেশের প্রতিরক্ষা বিভাগকে দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে তা নিতে আপত্তি কোথায়? তাহলে মার্কিন সংবিধানে যে আইনি বিধিনিষেধ রয়েছে সেটাও এড়ানো যাবে।
কিন্তু কেন ট্রাম্পকে এই উপহার দিচ্ছে কাতার? আসলে ট্রাম্পের নিজস্ব ব্যবসা ব্যাপকভাবে বাড়তে শুরু করেছে মধ্যপ্রাচ্যে। সৌদি আরবে ট্রাম্প টাওয়ার, কাতারে গলফ কোর্স তৈরি করছে ট্রাম্পের সংস্থা। ট্রাম্পের সংস্থার ক্রিপ্টো ব্যবহার করে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ২ বিলিয়ান ডলারের চুক্তি করেছে। ফলে একদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট, অন্যদিকে বাণিজ্যিকভাবে ফুলে ফেঁপে ওঠা ট্রাম্পকে খুশি করতে এই উপহার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাতার।
