সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গতকাল ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধে এন্ট্রি নিয়েছে আমেরিকা। ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে অপারেশন 'নাইট হ্যামার' চালিয়েছে মার্কিন সেনা। ওই হামলাকে 'দায়িত্বজ্ঞানহীন' বললেও এখনও পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে জড়ায়নি রাশিয়া। ইরানকে সরাসরি সাহায্যও করেনি ক্রেমলিন। কেন? সোমবার সেই ব্যাখ্যাই দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এদিন সেন্ট পিটার্সবাগে ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামের বৈঠকে যোগ দেন পুতিন। সেখানে তিনি বলেন, "প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং পরবর্তীকালের রাশিয়ার প্রায় কুড়ি লক্ষ মানুষ ইজরায়েলে বসবাস করেন। একে প্রায় রুশ ভাষাভাষী দেশ বললেও ভুল বলা হবে না!" রুশ প্রেসিডেন্ট জানান, ইতিহাসকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। রাশিয়ার জনসংখ্যার ১৫ শতাংশই যে মুসলিম ধর্মাবলম্বী সেকথাও জানিয়েছেন পুতিন। বিশ্লেষকদের অনুমান, এই কারণেই কোনওপক্ষে পুরোপুরি ঝুঁকতে রাজি নয় মস্কো। ইজরায়েলের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক রয়েছে, ইরানের সঙ্গেও রয়েছে সামরিক চুক্তি।
গত ২০ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, দু’সপ্তাহের মধ্যে ইরানে হামলা চালানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আমেরিকা। কার্যক্ষেত্রে বাহাত্তর ঘণ্টার মধ্যে (ভারতীয় সময় রবিবার ভোরে) ইরানের তিন পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালায় ওয়াশিংটন। যারপর এক বিবৃতিতে রুশ বিদেশমন্ত্রকের তরফে বলা হয়, ‘ইরানের উপর মার্কিন হামলার কড়া নিন্দা করছি। দায়িত্বজ্ঞানহীন এই হামলা আসলে আন্তর্জাতিক আইনের ঘোরতর বিরোধী। মার্কিন হামলার পরে অশান্ত পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। তার জেরে ওই এলাকা-সহ গোটা বিশ্বের সুরক্ষা বিঘ্নিত হতে পারে।”
প্রসঙ্গত, ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরি করছে, বহুবার মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে। যদিও আজ পর্যন্ত তা প্রমাণিত হয়নি। এরমধ্যেই ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ, মার্কিন হামলা ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিতে। বিশেষজ্ঞের দাবি, দশকের পর দশক ধরে ইরানে মোল্লাতন্ত্র কায়েম রয়েছে। নেতৃত্বে খামেনেই। ক্রমশ জ্বালানি তেলের ভাণ্ডার ইরান বিপজ্জনক হয়ে উঠছে ইজরায়েল, আমেরিকা-সহ পশ্চিম বিশ্বের একাধিক দেশের জন্যে। মরুদেশের শক্তিধর দেশটির উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারানো মানে মধ্যপ্রাচ্যের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারানো। বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, ঠিক সেই কারণেই খামেনেইকে নিকেশ করে ইরানের মোল্লাতন্ত্রের অবসান ঘটাতে চাইছে পেন্টাগন। গণতন্ত্র কিংবা নিদেন রাজতন্ত্রের দিকে ঠেলে দেওয়াই উদ্দেশ্য। যদিও রবিবার প্রকাশ্যে সেই দাবি মানল না ওয়াশিংটন।
