সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুড়ছে দক্ষিণ কোরিয়া! দাবানলের গ্রাসে দেশটির দক্ষিণ অংশ। ক্রমশ ছড়াচ্ছে লেলিহান শিখা। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছে দমকল ও সেনাবাহিনী। ইতিমধ্যেই বিধ্বংসী দাবানল প্রাণ কেড়েছে ১৮ জনের। ঘরছাড়া হাজার হাজার মানুষ। পুড়ে খাক ঐতিহাসিক মন্দির। দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল বলে উল্লেখ করেছে সরকার। জারি করা হয়েছে জরুরী অবস্থা।

গত ২১ মার্চ (শুক্রবার) রাজধানী সিওল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত গিয়ংসাং প্রদেশের সানচেং-এ প্রথম আগুনের সূত্রপাত হয়। সেই থেকেই লেলিহান শিখায় পুড়ছে বিঘার পর বিঘার জমি। এরপর ২২ মার্চ উত্তর গিয়ংসাং প্রদেশের ইউইসিয়ং, উলসান শহরের উলজু এলাকা, এবং দক্ষিণ গিয়ংসাংয়ের গিমহেতেও দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভাতে দমকলের সঙ্গে হাত লাগিয়েছে সেনাবাহিনী ও সাধারণ মানুষও।
জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১৫ হাজার হেক্টর জমি আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছে। প্রকৃতির রুদ্ররোষ থেকে বাদ যায়নি দেউংগুনসান পাহাড়ে অবস্থিত ঐতিহাসিক গৌনসা মন্দির। যা তৈরি হয়েছিল ৬৮১ খ্রিস্টাব্দে। এছাড়া আতঙ্ক তৈরি হয়েছে ইউনেসকোর স্বীকৃতপ্রাপ্ত হাহো গ্রাম এবং আন্দং শহরের বাইয়ংসান কনফুসিয়ান অ্যাকাডেমি নিয়ে। এই অঞ্চলগুলোর খুব কাছেই নতুন করে দাবানলের ধোঁয়া দেখা গিয়েছে। সেখান থেকেও বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এই মুহূর্তে আগুন নেভানোর কাজে নেমেছে প্রায় ৫ হাজার দমকলকর্মী। কাজে লাগানো হচ্ছে পুলিশ ও সেনার শয়ে শয়ে ইউনিটকে। ৮৭টি হেলিকপ্টারের সাহায্যে জল দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। কিন্তু কখনও শুষ্ক আবহাওয়া আবার কখনও হাওয়ার দাপটে আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছেন সকলে। পরিবেশবিদরা বলছেন, এহেন দাবানল দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে এই ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল মাসে আবহাওয়া শুষ্ক থাকার কারণে জঙ্গলে দাবানলের সূত্রপাত হয়। কিন্তু এই রকম ভয়াবহ পরিস্থিতি এর আগে কখনও দেখেনি দক্ষিণ কোরিয়া।