সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অগ্নিগর্ভ পাকিস্তানের (Pakistan) শিয়ালকোট। শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) এক নাগরিককে গণপিটুনি দিয়ে খুন ও এরপর তাঁর দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অনেক পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিড়ের উত্তেজনাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। ঘটনায় আশঙ্কা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Imran Khan)।
কিন্তু কেন এভাবে নির্মম জনরোষের শিকার হতে হল ওই ব্যক্তিকে? পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডন’-এর ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, প্রিয়ান্থা কুমারা নামের ওই ব্যক্তি শিয়ালকোটের এক কারখানার এক্সপোর্ট ম্যানেজার ছিলেন। তাঁকেই কারখানার শ্রমিকরা খুন করে পুড়িয়ে দিয়েছে।
[আরও পড়ুন: দু’বছর নিরাপদে থেকেও শেষ রক্ষা হল না, প্রথমবার করোনা হানা দিল এই দ্বীপে]
উত্তেজিত জনতার অভিযোগ, চল্লিশোর্ধ্ব ওই ব্যক্তি পাকিস্তানের মৌলবাদী সংগঠন ‘তহেরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান’ তথা টিএলপির একটি পোস্টার ছিঁড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছিলেন। দাবি, ওই পোস্টারে কোরানের কিছু অংশ লেখা ছিল। দু’জন কর্মী তাঁকে পোস্টারটি ছিঁড়তে দেখেছিলেন। এরপরই ক্রমে বিষয়টি রটে গেলে জনরোষের সৃষ্টি হয়।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই ম্যানেজারের উপরে চড়াও হয় ক্রুদ্ধ জনতা। একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা গিয়েছে একদল লোক স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে যাচ্ছে। পরে ওই ব্যক্তিকে খুন করে পুড়িয়ে দেয় তারা।
[আরও পড়ুন: ৩৮টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ‘ওমিক্রন’, জানাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা]
গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে পাকিস্তান। ইমরান খান টুইটারে একটি পোস্ট করে দিনটিকে পাকিস্তানের কাছে ‘লজ্জার দিন’ বলে জানিয়েছেন। তাঁকে লিখতে দেখা গিয়েছে, ”শিয়ালকোটে শ্রীলঙ্কার ম্যানেজারকে পুড়িয়ে মারার ভয়াবহ ঘটনাটি পাকিস্তানের কাছে এক লজ্জার দিন। আমি তদন্তের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। যারা যারা এই কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের আইনত কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। গ্রেপ্তারি শুরু হয়েছে।”
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী উসমান বুজদার খুনের ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা’ বলে জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। শিয়ালকোটের এই ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। ২০১০ সালে পুলিশের উপস্থিতিতেই উত্তেজিত জনতা দুই ভাইকে ডাকাত সন্দেহে নৃশংস ভাবে খুন করেছিল।