সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে যাচ্ছিলেন এক আততায়ী। ঠিক সময় পিছন দিক থেকে এসে আততায়ীকে জাপটে ধরে তাঁর বন্দুক কেড়ে নিয়েছিলেন তিনি। বেগতিক বুঝে পালিয়েও যান আততায়ী। ঠিক সেই সময়েই অন্য আততায়ীর গুলিতে তিনি জখম হন। আপাতত তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অস্ট্রেলিয়ার সিডনির (Sydney Shooting) বন্ডি সৈকতে হত্যাকাণ্ডের মুহূর্তের ওই দৃশ্য সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই নায়কের তকমা পেয়েছেন ফলবিক্রেতা আহমেদ আল আহমেদ।
রবিবার বন্ডির সৈকতে বিভীষিকার মুহূর্তে আহমেদ যা করেছেন, তাঁর ভূয়ষী প্রশংসা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ। নিজেকে আহমেদের তুতো ভাই বলে পরিচয় দিয়ে মুস্তফা নামে এক ব্যক্তি সংবাদমাধ্যমে বলেন, "ও (আহমেদ) এখন হাসপাতালে। জানি না ভিতরে কী চলছে! আমরা শুধু চাই, ও সুস্থ হয়ে উঠুক। ও আমাদের কাছে হিরো এখন।" আহমেদের পরিবার অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছে, জীবনে কখনও বন্দুক ধরেননি আহমেদ। ঘটনার সময় সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। আচমকাই গুলির আওয়াজ পেয়ে ছুটে যান। ভিড়কে লক্ষ্য করে আততায়ীদের গুলি চালাতে দেখেই বাধা দিতে গিয়েছিলেন আহমেদ। রবিবার রাতেই হাসপাতালে তাঁর শরীরে অস্ত্রোপচার হয়েছে।
আততায়ীদের আটকাতে গিয়ে বছর তেতাল্লিশের আহমেদ যে বীরত্ব দেখিয়েছেন, তাঁর একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ৫৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, একটি গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে লম্বা বন্দুক দিয়ে একের পর এক গুলি চালাচ্ছেন আততায়ী। তাঁর পরনে কালো পোশাক। ওই গাছের পিছন দিকে সারে সারে গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। গাড়ির পিছন থেকে আচমকা খালি হাতে বন্দুকবাজের দিকে এগিয়ে যান আহমেদ। পিছন থেকে যাওয়ায় বন্দুকবাজ তাঁকে দেখতে পাননি। পিছন থেকে জাপটে ধরে বন্দুকটি কেড়ে নেন আহমেদ। বেশ কিছু ক্ষণ বন্দুকবাজের সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি চলে। পরে আততায়ী পালিয়ে যান। আততায়ী পালানোর সময় তাঁর দিকে বন্দুকও তাক করেছিলেন আহমেদ। কিন্তু নিজে গুলি চালাননি। এর পর আহমেদের শরীরে দু'টি গুলি লাগে।
আলোর উৎসব হানুকা উপলক্ষে রবিবার সিডনির বন্ডি সৈকতে আনন্দে মেতেছিলেন শয়ে শয়ে ইহুদিরা। সেই সময় আচমকাই তাঁদের উপর হামলা চলে। দুই আততায়ীর নাম-পরিচয়ও প্রকাশ্যে এসেছে। এক জনের নাম সাজিদ আক্রম (৫০)। দ্বিতীয় জন সাজিদেরই বছর চব্বিশের ছেলে নাভিদ। দু'জনেরই পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত বলে জানা গিয়েছে।
