সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পর্যটকদের কাছে 'স্বর্গ' সিডনির বন্ডি বিচ রবিবার রক্তাক্ত হয়েছে জঙ্গি হামলায় (Bondi Beach Terror Attack)। ভয়ংকর সেই হামলার তদন্তে সামনে আসছে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর পাকিস্তানের যোগ। ইহুদিদের উৎসবে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে যে দুজন ১৬ জনের হত্যা করেছে তারা হল সাজিদ আক্রম (৫০) ও তার পুত্র নবিদ আক্রম (২৪)। জানা যাচ্ছে, এই পিতা-পুত্র পাকিস্তানের নাগরিক কিংবা পাক বংশোদ্ভূত। সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর থেকেই এরা অস্ট্রেলিয়া এসেছিল। তাদের গাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের পতাকা।
অস্ট্রেলিয়ার একাধিক সংবাদ সংস্থা সে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা 'আসিও'-কে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, 'খুব সম্ভবত হামলাকারিরা পাকিস্তানের নাগরিক বা পাক বংশোদ্ভূত। হামলার প্রকৃত উদ্দেশ্য জানা না-গেলেও এটা জানা গিয়েছে, ঘাতক পিতার অস্ট্রলিয়ায় একটি ফলের দোকান রয়েছে। রবিবার হামলা চালানোর আগে গাড়ি চালিয়ে সমুদ্রসৈকতে এসেছিল পুত্র নভিদ। তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্স উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, নাভিদের বাবাকে ঘটনাস্থলেই গুলি করে মারে পুলিশ। গুরুতর আহত অবস্থায় দ্বিতীয় হামলাকারী বর্তমানে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনার সঙ্গে তৃতীয় কোনও বন্দুকবাজ জড়িত থাকার প্রমাণ মেলেনি।
উল্লেখ্য, রবিবার দুপুরে সিডনির অদূরে বিখ্যাত বন্ডি বিচে ‘হানুক্কাহ’ উৎসবে অন্তত ১০০০ জন শামিল হয়েছিলেন। উৎসব চলাকালীন দুই বন্দুকবাজ ঢুকে পড়ে সেখানে। এরপরই ভিড়ে ঠাসা ওই অঞ্চলে শুরু হয় গুলিবৃষ্টি। নিমেষে রক্তে লাল হয়ে যায় সোনালি বেলাভূমি। একে একে ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। শিশু, মহিলা কাউকেই রেয়াত করা হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১৯৯৮ সালে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে বাবা এসেছিল। পরে ধাপে ধাপে তা রেসিডেন্ট ভিসা পেয়ে তারা সে দেশেই থেকে যায়। তার পুত্র নাভিদের জন্ম এখানেই। তদন্তে জানা গিয়েছে, হামলাকারী বাবা-ছেলে ‘শখের শিকারি’ বলে পরিচয় দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র জোগাড় করেছিল। লাইসেন্স পেতে ঘোরাঘুরিও করছিল। ৫০ বছরের বাবা একটি গানক্লাবের সদস্য।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলের খুব কাছ থেকে দু’টি বিস্ফোরক উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। সেগুলিকে পরে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। ঘাতক পিতা-পুত্রের গাড়ি থেকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেটস (আইএস)-এর পতাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ফলে অনুমান করা হচ্ছে, এরা আইএস জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে সিডনি পুলিশ।
