সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আরও চাপে ব্রিটেনের বরিস জনসন (Boris Johnson) সরকার। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে পদত্যাগ (Resign) করলেন দুই মন্ত্রী। আর তাঁদের ইস্তফা জনসন সরকারের নেতৃত্বকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল। যৌন কেলেঙ্কারি-সহ একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ক্রিস পিনচার নামে বর্ষীয়ান এক রাজনীতিককে বড়সড় পদে এনেছিলেন জনসন। দাবি ছিল, পিনচারের বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা তিনি কিছুই জানতেন না। কিন্তু সম্প্রতি এক সরকারি মুখপাত্রই ফাঁস করে দেন যে জনসন মিথ্যাচার করেছেন। আর এ নিয়ে শোরগোল উঠতেই প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে ইস্তফা দিলেন ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সচিব সাজিদ জাভিদ (Sajid Javid) ও অর্থ দপ্তরের প্রধান ঋষি সুনক (Rishi Sunak)। দু’জনই টুইটে নিজেদের পদত্যাগের কারণ হিসেবে প্রতিবাদের কথা জানিয়েছেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ মন্ত্রী ঋষি সুনক রীতিমত প্রশংসিত ইংরেজদের দেশে। নিজের দক্ষতার নিরিখে জনসন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসেছিলেন তিনি। করোনা ও লকডাউনের (Lockdown) মাঝেও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ভারসাম্য রক্ষা করেছিলেন সুনক। এমনকী বরিসের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই ভারতীয় বংশোদ্ভুতর নাম নিয়েও ব্রিটেনে চর্চা শুরু হয়েছিল। যদিও তাঁর স্ত্রীর সম্পত্তি নিয়ে খানিক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল একটা সময়। তবে সেসব সরিয়ে নিজের কাজ সম্মানের সঙ্গেই করে চলেছিলেন ইনফোসিস কর্তা নারায়ণমূর্তির জামাতা।
অন্যদিকে, সাজিদ জাভিদও দীর্ঘদিন ধরে সে দেশের স্বাস্থ্য (Health) বিভাগ সামলাচ্ছেন। জনসন সরকারের রীতিমতো দুই স্তম্ভ হিসেবে পরিচিত এঁরা। তবে সাম্প্রতিক বিতর্কে সরকারকে নতুন সংকটে ফেলল এই দু’জনের ইস্তফা। দুই মন্ত্রীর এহেন সিদ্ধান্তের পর অবশ্য ঘনিষ্ঠ মহলে বরিস জনসন জানিয়েছেন, তাঁর ভুল হয়েছিল। যাঁকে নিয়ে বিতর্ক, সেই ক্রিস পিনচারকে বরখাস্ত করা উচিত মন্ত্রিসভা থেকে।
[আরও পড়ুন: লোহার রড নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে কীভাবে ঢুকল হাফিজুল? তদন্তে SIT গঠন]
কিন্তু কী এমন ঘটল, যাতে পরপর দুই মন্ত্রী জনসনের মন্ত্রিসভায় ছেড়ে বেরিয়ে এলেন? জানা যাচ্ছে, এর শিকড় বেশ গভীরে। সেই ২০১৯ সালে ক্রিস পিনচার (Chris Pincher) নামে এক বর্ষীয়ান রাজনীতিককে মন্ত্রিসভায় এনেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তাঁর বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারি-সহ একাধিক অভিযোগ ছিল সেসময়। এমন একজনকে কেন প্রশাসনে আনা হল, তার জবাবে জনসন কার্যত দায়সারাভাবেই জানিয়েছিলেন, পিনচার সম্পর্কে এসব তথ্য তাঁর কাছে ছিল না। কিন্তু পরে সরকারি এক মুখপাত্রই জানান যে প্রধানমন্ত্রী যা বলছেন, তা অসত্য।
[আরও পড়ুন: মধ্যবিত্তের হেঁশেলে আগুন, ফের লাফিয়ে বাড়ল রান্নার গ্যাসের দাম]
এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হতেই ঋষি সুনক এবং সাজিদ জাভিদ মতপ্রকাশ করেন, পিনচার ইস্যুতে সঠিক ভূমিকা পালন করেনি জনসন সরকার। জনতার কাছে দায়বদ্ধতা পালন করেনি। আর তার প্রতিবাদেই তাঁদের ইস্তফা।