সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিন বছর পেরিয়ে গেলেও জারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই থামানোর নাম নেই ইজরায়েলের। এখনও পর্যন্ত কোনও সংঘাতেরই রফাসূত্র মেলেনি। এই পরিস্থিতে উদ্বেগ বাড়ছে ভারত আর পাকিস্তানকে নিয়ে। যেকোনও মুহূর্তে পহেলগাঁও হামলার জবাব দিতে পড়শি দেশে আঘাত হানতে পারে ভারতীয় সেনা! জোরাল হচ্ছে এমনই জল্পনা। দিল্লিতে এখন তৎপরতা তুঙ্গে। ঘন ঘন বৈঠক করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর ও পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে ফোন করলেন আমেরিকার বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও। দিলেন শান্তি বজায় রাখার বার্তা।
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন ভ্যালিতে ঘটে যাওয়া নারকীয় হত্যাকাণ্ড গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। হিন্দু পরিচয় জেনে ২৬ জনকে গুলিতে ঝাঁজরা করে দিয়েছে জঙ্গিরা। এই ঘটনায় পাকিস্তানের মদতপুষ্ট লস্করের হাত দেখছে ভারত। তাই প্রতিবাদে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করেছে দিল্লি। পালটা দিয়েছে পাক সরকারও। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে নিয়ন্ত্রণরেখায় লাগাতার গুলি চালিয়ে যাচ্ছে পাক সেনা। যা নিয়ে গতকাল বুধবার ইসলামাবাদকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে দিল্লি। হটলাইনে কথা হয়েছে দুই দেশের সেনা আধিকারিকদের মধ্যে। সেখানেই পাকিস্তানকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সীমান্তে সংঘর্ষ নিয়ে যেন সতর্ক হয় তারা। মন্ত্রীসভার সদস্যদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত বৈঠক করছেন মোদি। গতকাল রাতেও তিনি জয়শংকর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি।
জানা গিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে বুধবার রাতেই জয়শংকর ও শাহবাজকে ফোন করেন মার্কো রুবিও। পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় নিহতদের প্রতি শোকপ্রকাশ করেছেন তিনি। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতকে সব রকম সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন বিদেশসচিব। পাশাপাশি তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় এই উত্তেজনামূলক পরিস্থিতি ঠিক করতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার কাজ করার জন্য ভারতকে উৎসাহিতও করেছেন। এই কথোপকথনের কথা এক্স হ্যান্ডেলে তুলে ধরে জয়শংকর বলেন, 'গতকাল মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিওর সঙ্গে পহেলগাঁও হামলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই নৃশংস ঘটনা যারা ঘটিয়েছে সেই অপরাধীদের বিচার করা হবেই।' এদিকে, পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজকে রুবিও বলেন, 'ভারতের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথে আসতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে হবে।'
প্রসঙ্গত, পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন কাশ্মীরের তিন ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার তাঁদের আবেদনের শুনানি হবে শীর্ষ আদালতে। উল্লেখ্য, পহেলগাঁও হামলার পরে ইতিমধ্যেই জোরকদমে তদন্ত চালাচ্ছে এনআইএ। কীভাবে হামলার প্রত্যাঘাত করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে সেনাকে। এই মঙ্গলবারই পহেলগাঁও হামলার এক সপ্তাহ পূরণ হয়েছে। অথচ এখনও মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে ২৬ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা জঙ্গিরা। এ পর্যন্ত কাশ্মীরে বেশ কয়েকটি অভিযান ও ধরপাকড় চালিয়েও হামলার মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার বা নিকেশ করা যায়নি। কিন্তু এই হামলার প্রত্যাঘাতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্র।
