সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নেপালে ফেরাতে হবে রাজতন্ত্র। ফের নেপাল হয়ে উঠুক হিন্দু রাষ্ট্র। এমনই দাবিতে সম্প্রতি সোচ্চার হয়েছে প্রতিবেশী দেশটি। এরই মধ্যে নেপালের প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহর সমর্থকদের মিছিলে দেখা গিয়েছে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের পোস্টারও! যাকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

কেন আন্দোনকারীরা যোগীর পোস্টার নিয়ে শামিল হয়েছিলেন আন্দোলনে? মনে করা হচ্ছে, এর পিছনে অন্যতম কারণ হল নেপালে রাজতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন রয়েছে যোগীর। তাছাড়া জ্ঞানেন্দ্র শাহর সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর। গত জানুয়ারিতে তিনি ভারত সফরে এলে যোগীর সঙ্গে সাক্ষাৎও করেন। স্বাভাবিক ভাবেই উঠছে প্রশ্ন, তাহলে কি এই আন্দোলনের দিকে পুরোদস্তুর নজরে রেখেছে নয়াদিল্লি? এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পিছনে নয়াদিল্লির কূটনৈতিক অবস্থানও দেখছেন অনেকেই। নেপালে যতগুলি সরকার এসেছে, ক্রমে তারা ঝুঁকেছে চিনের দিকে। এই পরিস্থিতিতে ভারতই পরোক্ষে এই ধরনের আন্দোলনে অক্সিজেন যোগ করছে কিনা সেই প্রশ্ন তুলছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
রাজতন্ত্রের সমর্থক রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টির মিছিলে যোগীর ছবি কেন? দলের মুখপাত্র খোদ জ্ঞানেন্দ্র দাবি করছেন, এর পিছনে রয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কেপি ওলির হাত। সোশাল মিডিয়ায় এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, 'যোগী আদিত্যনাথের ছবি ওই মিছিলে দেখানোর পিছনে রয়েছে বিষ্ণু রিমালের নির্দেশ। তিনি প্রধানমন্ত্রী কেপি ওলির মুখ্য উপদেষ্টা।' এই দাবি অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন রিমাল।
প্রসঙ্গত, নেপালে ২০০৬ সালে দেখা গিয়েছিল এর উলটো ছবি। রাজপথে ব্যাপক জন সমাবেশ হয়েছিল রাজাকে গদিচ্যুত করার দাবি তুলে। শেষপর্যন্ত বাধ্যতই সরে যান জ্ঞানেন্দ্র। বছর দুয়েক পরে ২০০৮ সাল থেকে পাকাপাকি ভাবে যতিচিহ্ন পড়ে যায় রাজতন্ত্রের উপরে। রাজা জ্ঞানেন্দ্র হয়ে যান আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই আম নাগরিক। সেই সময় বহু মানুষেরই বিশ্বাস ছিল এবার ‘সুসময়’ ফিরবে। কিন্তু ২০০৮ সাল থেকে এযাবৎ ১৩টি সরকার দেখেছে নেপাল। রাজনৈতিক স্থিরতা আসেনি। বরং দুর্নীতি বেড়েছে উত্তরোত্তর। অর্থনীতি ধুঁকতে শুরু করেছে। ফলে এবার সেদেশের মানুষের বড় অংশই মনে করতে শুরু করেছেন এই অস্থিরতা থেকে বাঁচাতে পারে রাজতন্ত্রই। আর তাই শুরু হয়েছে আন্দোলন। যে আন্দোলনে জড়িয়ে গেলেন যোগী আদিত্যনাথও।