সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানের যাত্রীবাহী জাফার এক্সপ্রেস অপহরণের হাড়হিম ভিডিও প্রকাশ্যে আনল বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি। ১ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে পাক সেনা ও গোয়েন্দা বিভাগ।

জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বালোচিস্তান প্রদেশের কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পেশোয়ারে যাচ্ছিল যাত্রীবাহী জাফার এক্সপ্রেস। পাক সেনাকর্মী থেকে শুরু করে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ও নিরাপত্তা বাহিনীর অনেকেই ছিলেন ওই ট্রেনে। সকাল ৯টা নাগাদ কোয়েটা থেকে ছাড়ে ট্রেনটি এরপর দুপুর নাগাদ প্রায় ৫০০ যাত্রী-সহ এই ট্রেনের দখল নেয় বালোচ বিদ্রোহীরা। গোটা ঘটনার যে ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, রুক্ষ পাহাড়ি অঞ্চল থেকে যাওয়ার সময় হঠাৎ ট্রেনের সামনে ব্যাপক বিস্ফোরণ হয়। সঙ্গে সঙ্গে থেমে যায় ট্রেনটি।
এরপর ট্রেনের মধ্যে থাকা যাত্রীদের অপহরণ করে বিদ্রোহীরা। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ট্রেন থেকে নামিয়ে এক জায়গায় জড়ো করা হয় যাত্রীদের। ট্রেনের সামনেই সশস্ত্র বিদ্রোহীদের দুটি দল বসে রয়েছে। বিদ্রোহীদের আর একটি দলকে দেখা যাচ্ছে, পাহাড়ের একেবারে চূড়ায় বসে গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। অনুমান করা হচ্ছে, উলটো দিকের পাহাড়ের উপর থেকে বিদ্রোহীদের আর একটি অংশ গোটা ঘটনা ক্যামেরা বন্দি করে। যা ইতিমধ্যেই ভাইরাল সোশাল মিডিয়ায়। শুধু তাই নয় সূত্রের খবর, ওই ট্রেনের মধ্যেই বিস্ফোরক বোঝাই জ্যাকেট পরে উপস্থিত ছিল বিদ্রোহীদের অনেকে। ট্রেন থামার পর যাত্রীদের নামিয়ে আনে তারা।
ট্রেন অপহরণের পর বিদ্রোহীদের উপর পালটা হামলা চালাতে অভিযানে নামে পাক সেনা। বালোচ বিদ্রোহীদের দাবি, এই অভিযানে ৩০ জনের বেশি পাক সেনার মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ৮ ঘণ্টা ধরে পাক সেনার সঙ্গে লড়াই চালানোর পর পাক সেনা পিছু হটেছে। ৪৮ ঘণ্টার চরমসীমা দেওয়া হয়েছে পাকিস্তান সরকারকে। বিবৃতি জারি করে বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, “ট্রেন এখন আমাদের দখলে। বর্তমানে ২১৪ জন পণবন্দি রয়েছেন। পাক সরকার যে বালোচ বিদ্রোহীদের বন্দি করেছেন তাঁদের মুক্তির বদলে আমরা বন্দিদের মুক্তি দিতে রাজি আছি। যদি আমাদের দাবি না মেনে ফের সেনা অভিযান চালানো হয়, সেক্ষেত্রে সব বন্দিদের শেষ করে দেব ও এই ট্রেন পুরোপুরি ধ্বংস করে দেব।”
অন্যদিকে পাক সেনার তরফে দাবি করা হয়েছে, বালোচ বিদ্রোহীদের হাত থেকে ১৫৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। ২৭ জন জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছে। যদিও বালোচ বিদ্রোহীদের দাবি, ওই ১৫৫ জন সাধারণ নাগরিক। অপহরণের পর তাঁদের পরিচয় খতিয়ে দেখে বিদ্রোহীরাই তাঁদের মুক্তি দিয়েছে। এবং ২৭ বিদ্রোহী হত্যার দাবিও খারিজ করেছে বিদ্রোহীরা।