সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জ্ঞানবাপী মসজিদ নাকি মন্দির? এই বিতর্কে নয়া মাত্রা যোগ করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র গোরক্ষপুরে হিন্দি দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে জানালেন, 'জ্ঞানবাপী সাক্ষাৎ বাবা বিশ্বনাথ। একে মসজিদ বলা দুর্ভাগ্যজনক।' পাশাপাশি মুসলিম সম্প্রদায়কে ওই জায়গা ছেড়ে দেওয়ারও আবেদন জানান যোগী।
জ্ঞানবাপী মসজিদ হলেও তার জায়গায় জায়গায় রয়েছে মন্দিরের অজস্র নিদর্শন। যাকে হাতিয়ার করেই সবর হয়েছে হিন্দু পক্ষ। চলছে আইনি লড়াই। এহেন বিতর্কের মাঝেই শনিবার সরকারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে যোগী বলেন, "এটা দুর্ভাগ্যজনক যে জ্ঞানবাপীকে লোকে মসজিদ বলে। কিন্তু বাস্তবে এটি সাক্ষাৎ বিশ্বনাথ।" একইসঙ্গে যোগী জানান, মুসলিম সম্প্রদায়ের উচিৎ তাঁদের অতীতের ভুল স্বীকার করে নিয়ে মসজিদের জায়গা মন্দিরের জন্য ছেড়ে দেওয়া। বর্তমান সময়ে বিতর্কিত এই জায়গাকে ঘিরে যে সমস্যা শুরু হয়েছে তার দায় মুসলিমদের উপর ছেড়ে দিয়ে যোগী বলেন, 'তাঁরা এগিয়ে এলেই সমস্যার সমাধান হবে।'
হিন্দুপক্ষের দাবি, বর্তমানে যে জায়গায় মসজিদ রয়েছে সেখানে একটা সময় ছিল হিন্দুদের বিশ্বনাথ মন্দির। ১৭ শতকে মুঘল আমলে ঔরঙ্গজেব এটি ভেঙে মসজিদ নির্মাণ করেন। যদিও মসজিদের নানা অংশে এখন ছড়িয়ে রয়েছে মন্দিরের নিদর্শন। বারাণসী আদালত, এলাহাবাদ হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট এই তিন আদালতে একযোগে চলছে মামলা। যার বেশিরভাগ রায়ও গিয়েছে হিন্দুদের পক্ষে। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই যোগীর এহেন বার্তার পিছনে অন্য রাজনীতি দেখছে বিশেষজ্ঞ মহল।
আসলে শীঘ্রই উত্তরপ্রদেশের ১০টি আসনে রয়েছে উপনির্বাচন। এখনও ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ না হলেও কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে বিজেপি। প্রচারে পিছিয়ে নেই খোদ যোগীও। চেনা ছকে উপনির্বাচনের আগে হিন্দুত্বকে হাতিয়ার করে মাঠে নেমেছেন যোগী আদিত্যনাথ। সাম্প্রতিক সময়ে উত্তরপ্রদেশে রাজনীতির মাঠে কিছুটা ব্যাকফুটে গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে, লোকসভা নির্বাচনের ফলে স্পষ্ট যে অতীতের তুলনায় পায়ের নিচে মাটি অনেকটা শক্ত করেছে সপা। এই অবস্থায় হিন্দুত্বের এজেন্ডাকে হাতিয়ার করে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপি। ভোটের ময়দানে অস্ত্র হিসেবে উঠে আসছে জ্ঞানবাপী প্রসঙ্গ।