সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপর বড়সড় হামলার অভিযোগে উত্তপ্ত বাংলাদেশ (Bangladesh)। ১৪ টি হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর (Vandalised) করার অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। সে দেশের উত্তর-পশ্চিমের জেলা ঠাকুরগাঁওতে এই ঘটনা ঘটেছে বলে খবর। স্থানীয় পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার রাত থেকে রবিবার সকালের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। পরিকল্পনা করেই এই হামলা ঘটানো হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। বাড়ানো হয়েছে এলাকার নিরাপত্তা।
জানা গিয়েছে, ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গি নামে এক এলাকার ১৪ টি হিন্দু মন্দিরে (Hindu Temple) তাণ্ডব চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। কোথাও মন্দিরের একাংশ, কোথাও আবার দেবদেবীর মূর্তি ভাঙা হয়েছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা এলাকার পুকুরে ভাঙাচোরা অংশ দেখতে পেয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশে। বালিয়াডাঙ্গি থানার পুলিশ তদন্তে নেমেছে।
[আরও পড়ুন: সরকারি চাকরিতে পিতার জাতি পরিচয়েও মেয়েরা সংরক্ষণের সুবিধা পাবেন, রায় আদালতের]
বালিয়াডাঙ্গির হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা বৈদ্যনাথ বর্মনের কথায়, ”অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন দুষ্কৃতী এখানকার তিনটি ইউনিয়ন এলাকার ১৪টি মন্দিরে ভাঙচুর চালিয়েছে। কোথাও কোথাও মূর্তি ভেঙে পুকুরে ফেলে দিয়েছে। এই দুষ্কৃতী কারা, কেন এ কাজ করল, সে বিষয়ে আমরা সম্পূর্ণ অন্ধকারে। তবে তাদের গ্রেপ্তার করে কঠোর থেকে কঠোরতর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।” ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সমর চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ”এখানে বরাবর খুব সম্প্রীতির পরিবেশ। মুসলিমদের সঙ্গে আমাদের সদ্ভাব রয়েছে। এর আগে কখনও হিন্দুদের উপর এত বড় হামলা হয়নি। বুঝতেই পারছি না, কারা এমনটা করল।” বালিয়াডাঙ্গি থানার ওসি খায়রুল আনম অবশ্য স্পষ্ট জানাচ্ছেন, এটা পরিকল্পিত হামলাই। এলাকার শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বিঘ্নিত করাই উদ্দেশ্য ছিল দুষ্কৃতীদের। তবে অপরাধী যে-ই হোক, কঠোর শাস্তি পাবেই। এই আশ্বাসও দিয়েছেন ওসি।
[আরও পড়ুন: লক্ষ্য শহর পরিচ্ছন্ন রাখা! জিটি রোডের দু’ধারের দোকান উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত আসানসোল পুরনিগমের]
এই প্রথম নয়, বাংলাদেশে সাম্প্রতিককালে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করতে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ধর্মীয় স্থানের উপর হামলার ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। কখনও কুমিল্লা, কখনও নওগাঁ, কখনও চাঁপাইনবাবগঞ্জ – মন্দিরে ঢুকে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। হিন্দুদের নিরাপত্তা বড়সড় প্রশ্নের মুখে। তবে এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে হাসিনা সরকার। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করেছেন শেখ হাসিনা (Bangladesh PM Sheikh Hasina) নিজে। অথচ সেসবের পরও ঠাকুরগাঁওয়ে এত বড় হামলা চলল।