সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওসমান হাদির মৃত্যুর পর নতুন করে হিংসা ছড়িয়েছে বাংলাদেশে। কট্টরপন্থীরা হামলা চালাচ্ছে সংবাদমাধ্যম, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সংখ্যালঘুদের উপরে। দেশজুড়ে লাগাতার অস্থিরতার পরিবেশ আসলে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র, মনে করছে আওয়ামি লিগের অনুপস্থিতিতে পদ্মাপাড়ের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। সরাসরি জামাতকে দোষারোপ না করলেও রবিবার ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগির।
এদিন বিএনপি শীর্ষনেতা শঙ্কার কথা বলেন, "এখন দেশে বিভিন্ন রকম কথাবার্তা উঠছে। বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। আন্দোলন হচ্ছে। কেন জানি মনে হয়, দেশকে অস্থির করে তোলার জন্য কিছু সংখ্যক লোক পেছন থেকে কাজ করছে। এ বিষয়ে আমাদের সাবধান থাকতে হবে।" রবিবার দুপুরে দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও শহরে বেসরকারি সংস্থা মানবকল্যাণ পরিষদের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে স্থানীয় আলেম–ওলামাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, "আমরা যেন আবার অন্ধকারের দিকে চলে না যাই। আমরা যেন নিজেদের মধ্যে বিভেদ–অনৈক্য সৃষ্টি করে চক্রান্তকারীদের হাতে না পড়ি। এমনটা হলে দেশ আবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।" যোগ করেন, "এই নির্বাচনকে ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে, বানচালের চেষ্টা করা হচ্ছে। সেটা যেন করতে না পারে, আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।"
জামাতের নাম না করে মির্জা ফখরুল বলেন, "আজ আমাদের সম্পর্কে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা একটা কথা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, আমাদের ধর্মবোধ, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি রক্ষা করার জন্য আমরাই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করেছি।’ আরও বলেন, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম। আমরা শান্তি চাই। আমরা চাই, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক।" বলা বাহুল্য, এই বক্তব্যে মৌলবাদী এবং দেশটির সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ--- উভয় পক্ষকে বার্তা দিয়েছেন বিএনপি শীর্ষনেতা।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৭ বছর বাদে গত ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরেছেন খালেদাপুত্র বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান। তিনি ফিরে আসায় নতুন করে প্রাণ সঞ্চার হয় দলে। ঢাকায় লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়ে অভূতপূর্ব গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে তারেককে। আওয়ামি লিগের অনুপস্থিতে দেশে একমাত্র বড় দল বিএনপি। সবারই ধারণা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়বে তারা। আর দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন তারেক জিয়া।
যদিও মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে প্রথমবার ক্ষমতার স্বাদ পাওয়া জামাত যে ছেড়ে কথা বলবে না, তা বুঝতে বাকি নেই বিএনপি নেতৃত্বের। ইতিমধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজনৈতিক দল এনসিপি জোট বেঁধেছে জামাতের সঙ্গে। মৌলবাদী সংগঠনটির নেতৃত্বে দশ দলীয় জোট গঠিত হয়েছে। তারাই প্রধান প্রতিপক্ষ তারেক রহমানের দলের। তারচেয়েও বড় প্রতিপক্ষ হয়তো বা কট্টরপন্থা। বাংলাদেশের মানুষ কি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় দেখতে চায়? নাকি জামাতের হাত ধরে তালিবানি শাসন কায়েম হবে পদ্মাপাড়ে! উত্তর মিলবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে।
