সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যখন আলটপকা প্রশ্ন আসে ‘ভূতে ভয় পাও?’ মজা করে অনেকেই উত্তর দিয়ে থাকেন ‘ভূতে আর ভয় কী?’ ভূতের অস্তিত্ব সম্পর্কেও প্রশ্ন করেন বহু যুক্তিবাদী৷ ভূত নিয়ে মানুষের মনে এখনও বহু প্রশ্ন থাকলেও অশরীরীর উপস্থিতি অনেকেই স্বীকার করে নিয়েছেন৷ গোয়ার নেরুলের বাসিন্দা ডিম্পল৷ তাঁর মা রাধিকা (নাম পরিবর্তিত) স্থানীয় হাসপাতালের কর্মী৷ পেশায় নার্স ডিম্পলের মা’কে দিনের বেশিরভাগ সময়ই হাসপাতালে কাটাতে হত৷ ডিম্পলের মায়ের যেদিন সন্ধ্যায় হাসপাতালে ডিউটি থাকত, সেদিন রাতে হাসপাতালেই থেকে যেতে হত তাঁকে৷ কারণ পরদিন সকালেই থাকত মর্নিং ডিউটি৷ আর সন্ধ্যার ডিউটি শেষ হত প্রায় এগারোটা নাগাদ৷ সালটা ২০১৪৷ গায়ে জ্বর নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন রাধিকা৷ সন্ধ্যার ডিউটি বেশ কষ্ট করেই করছিলেন তিনি৷ অবশেষে কোনওরকমে কাজ শেষ করে তিনি রেস্টরুমে চলে যান৷ ডিউটি শেষে সাধারণত রেস্টরুমেই থেকে যেতেন অনেক নার্স৷ কিন্তু সেদিন কেউ ছিলেন না৷ খুবই অসুস্থ বোধ করায় সেখানে গিয়ে শুয়ে পড়েন রাধিকা৷ কিছুক্ষণ পরে তাঁরই এক সহকর্মী এসে ওষুধ দিয়ে যান তাঁকে৷
অতিরিক্ত দুর্বলতার জন্য কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন, তা নিজেই বোঝেননি রাধিকা৷ রাত দুটোর সময় হঠাৎ তাঁর ঘুম কোনও এক অজ্ঞাত কারণে ভেঙে যায়৷ ঘুম চোখেই তিনি তাকিয়ে দেখেন রেস্টরুমের দরজা খোলা৷ জ্বরের ঘোরে তিনি মনে করতে পারছিলেন না দরজাটা তিনি খুলে রেখেছিলেন না বন্ধ করে দিয়েছিলেন৷ কিন্তু কিছুক্ষণ পরই তাঁর ভুল ভাঙে৷ তিনি দেখেন দরজা দিয়ে ভিতরে আসছেন একজন সাদা পোশাক পরা ব্যক্তি৷ দূর থেকে সেই ব্যক্তিকে দেখে ডাক্তারই ভেবেছিলেন ডিম্পলের মা৷ ভেবেছিলেন তাঁর অসুখের খবর শুনে বোধহয় তাঁকে দেখতে এসেছেন৷ কিন্তু সেই ছায়ামূর্তি কাছাকাছি আসতেই তিনি লক্ষ্য করেন, ওই ছায়ামূর্তির মুখের জায়গায় তিনি এমন কিছু মুখ দেখতে পাচ্ছেন যাঁদের তিনি খুব ভালবাসতেন৷ কিন্তু আজ তাঁদের কেউই আর বেঁচে নেই৷
এমন ব্যাপার ঘটতেই চমকে যান ডিম্পলের মা৷ কিন্তু ততক্ষণে সেই ব্যক্তি এগিয়ে এসেছেন তাঁর দিকে৷ কোনও কথা না বলেই সামনে এসে দাঁড়ালেন তিনি৷ ডিম্পলের মা দেখতে পেলেন, তিনি একজন সুন্দর যুবক এবং সম্ভবত ডাক্তারই৷ নিজের মনেই ভেবে নিলেন তাঁর জ্বর শুনে মনে হয় তাঁর খোঁজ নিতে এসেছেন৷ কিন্তু সেই সম্ভাব্য চিকিৎসক কোনও কথা বললেন না৷ তাঁর গলার কাছে হাত ঠেকিয়ে দেখতে গেলেন জ্বর আছে কিনা৷ কিন্তু সেই ব্যক্তি গলায় হাত ছোঁয়াতে একপ্রকার শিউরে উঠলেন রাধিকা৷ বরফের মতো ঠাণ্ডা সেই হাত সরিয়ে দিতে যাবেন যখন তিনি, ঠিক তখনই গলা টিপে ধরল সেই ব্যক্তি৷ শ্বাসরোধ হয়ে আসায় চিৎকার করতে পর্যন্ত পারছিলেন না তিনি৷ অনেক কষ্টে পাশে রাখা ব্যাগ থেকে ঠাকুরের বই যেই বের করলেন, তখনই নিমেষে গায়েব হয়ে গেল সেই মূর্তি৷
এরপর আর এক মুহুর্তও অপেক্ষা না করে বাকি নার্সদের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি৷ নিজের অভিজ্ঞতা জানানোর পর জানতে পেরেছিলেন, ওই অশরীরীর পাল্লায় অন্য একজন নার্সও একবার পড়েছিলেন৷
আজও ডিম্পলের মা ওই হাসপাতালেই চাকরি করেন৷ কিন্তু ঠাকুরের বই ছাড়া কখনও তিনি হাসপাতাল মুখো হন না৷
The post হাসপাতালের রেস্টরুমে আজও একা যেতে ভয় পান নার্সরা! appeared first on Sangbad Pratidin.