সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এত দিন ছিল সেলফির প্রকোপ। এবার তার সঙ্গে যোগ হল ফেসবুক লাইভ। প্রযুক্তির অগ্রগতি যা অজান্তেই কেড়ে নিচ্ছে তরতাজা প্রাণ। সম্প্রতি যার সাক্ষী থাকল পেনসিলভ্যানিয়া। হাইওয়েতে গাড়ি দাঁড় করিয়ে ফেসবুকে লাইভ হতে গিয়ে প্রাণ হারালেন দুই বন্ধু।
পেনসিলভ্যানিয়া পুলিশ জানিয়েছে, ওই দুই বন্ধুর নাম ব্রুক মিরান্ডা হিউ এবং শানিয়া মরিসন টুমি। বয়স যথাক্রমে ১৮ এবং ১৯ বছর। হাইওয়ের উপর আচমকাই গাড়ি দাঁড় করানোয় অবাক হয়ে বন্ধুর কাছে জানতে চেয়েছিল টুমি- “তুমি কি ফেসবুকে লাইভ হচ্ছো?” প্রশ্নের জবাব মেলেনি। তার আগেই একটা ট্রাক্টর-ট্রেলারের ধাক্কায় উড়ে যায় গাড়িটা। ভয়াবহ বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় দুই বন্ধুর দেহ।
তবে ওই প্রযুক্তির সাহায্যেই বিস্ফোরণের আগের ঘটনার কিছুটা লাইভ হয়ে যায় ফেসবুকে। দেখা যায়, পিছন থেকে এসে ট্রাক্টর-ট্রেলারটা ধাক্কা দিল গাড়িটাকে। এও দেখা গিয়েছিল, গাড়ির সামনের আসনে মোবাইল হাতে বসে আছেন হিউ। সেই ভিডিও দেখতে দেখতে ভাইরাল হয়ে যায়। ইতিমধ্যেই হিউয়ের ফেসবুক পেজে গিয়ে সেই ভয়াবহ ঘটনা চাক্ষুষ করেছেন বিশ্বের অনেকেই। আপাতত তদন্তের স্বার্থে ইন্টারনেট থেকে সেই ভিডিওটি তুলে নেওয়া হয়েছে।
খবরটা পাওয়ার পর স্বাভাবিক ভাবেই শোকের ছায়া ঘনিয়েছে ঘনিষ্ঠমহলে। বিশেষ করে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন হিউ এবং টুমির এক বন্ধু। ১৭ বছরের সেই মেয়ের নাম সামান্থা পিয়েসেকি। ওই দিন ওই গাড়িতে হিউ এবং টুমির সঙ্গে তিনিও ছিলেন। তাঁরও একসঙ্গে হ্যাং আউটে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাড়ি থেকে মা বার বার ফোনে ডাকাডাকি করায় বাড়ি ফিরতে বাধ্য হন সামান্থা। ঘটনার কথা শোনার পর এবং ভিডিওটি নিজের চোখে দেখার পর আতঙ্কে প্রায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছেন তিনি।
“এই দুর্ঘটনার খবর আমায় ভিতর থেকে একেবারে ভেঙে দিয়েছে! জানি না, আমি গাড়িতে থাকলে কী হত! হয়তো ওদের সচেতন করতে পারতাম! হয়তো দুর্ঘটনাটা ঘটতই না”, ক্রমান্বয়ে আক্ষেপ করে চলেছেন সামান্থা।
পুলিশ জানিয়েছে, যে ট্রাক্টর-ট্রেলারটি ধাক্কা দিয়েছে হিউদের গাড়িটাকে, তার চালকও দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁকে আপাতত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে। পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত করছে। সবার কেবল একটাই প্রশ্ন- চালক যখন দেখতেই পেয়েছিলেন একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে সামনে, তখন তিনি কেন গতিবেগ সম্বরণ করতে পারলেন না?
The post ফেসবুক লাইভে নিজের মৃত্যু রেকর্ড করে গেলেন তরুণী appeared first on Sangbad Pratidin.