সুকুমার সরকার, ঢাকা: স্বামীর মদতে মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল আট যুবকের বিরুদ্ধে। নির্যাতিতার অভিযোগ, মাজারের অনুষ্ঠান দেখে ফেরার সময় তাঁকে ওই আট যুবকের হাতে তুলে দেয় স্বামী। এই ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর স্বামী রতন-সহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, মহিলার অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছে ধৃতেরা।
বেশ কয়েকবছর আগে বাংলাদেশের ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের সরিষা ইউনিয়নের এনায়েতনগর গ্রামের বাসিন্দা বছর তিরিশের রতন মিঞার সঙ্গে বিয়ে হয় ওই মহিলার। শনিবার বিকেলে স্বামীর সঙ্গে ঈশ্বরগঞ্জ দমকলের পিছনের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ খুঁজতে যান তিনি। তবে মেলেনি কোনও কাজ। বাধ্য হয়ে স্বামীর সঙ্গে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য জাটিয়া ইউনিয়নের শিমুলতলি মোড়ে যান মহিলা। তবে তাঁকে স্বামী বলেন এখন বাড়ি ফিরতে হবে না। পরিবর্তে শিবপুর এলাকায় একটি দরগায় গান শুনতে যাবেন। সেই মতো সেখানেই যান ওই দম্পতি। রাত ১১টা নাগাদ অনুষ্ঠান শেষে হেঁটে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয় তাঁরা। খেত পেরিয়ে বাড়ি না গিয়ে জাটিয়া ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের বাবু মিঞার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে যায় রতন। অভিযোগ, সেখানে গিয়ে স্ত্রীকে মারধর শুরু করে রতন। পরে সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকা আটজনের হাতে তুলে দেয় স্ত্রীকে। অভিযোগ, ওই আটজন ধর্ষণ করে তাঁকে। রবিবার গণধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূ থানায় যান। তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। অভিযোগ পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয় প্রধান অভিযুক্ত রতনকে। এছাড়াও সরিষা ইউনিয়নের লংগাইল গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলামকেও গ্রেপ্তার করা হয়। ঈশ্বরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নাল আবেদিন বলেন, “স্ত্রীকে ধর্ষকদের হাতে তুলে দেয় রতন। গণধর্ষণের ঘটনার এমন খবর পেয়ে স্বামী রতন-সহ নজরুল ইসলাম নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করেছি আমরা। অন্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারিতে পুলিশি অভিযান জারি রয়েছে।”
[আরও পড়ুন: খুচরো হোক বা পাইকারি, চট্টগ্রামের মাদক সাম্রাজ্যে মক্ষিরানী মহিলারাই!]
বিয়ের পর থেকেই রতন তার শ্বশুরবাড়ি থেকে পণ দাবি করত। স্ত্রীকে দেহব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত করার চেষ্টা করেছিল সে। তবে তা না পারায় বেধড়ক মারধর করত স্ত্রীকে। বিয়ের তিন বছরের মাথায় স্ত্রীকে তালাকও দেয় সে। পরে সে ক্ষমা চেয়ে নেয়। আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করে বাড়িতে আনে। তবে তালাকের পর আবার বিয়ে করেও বদলায়নি রতন। মারধর এবং মানসিক নির্যাতন চলতেই থাকে। দিন পনেরো আগে রতন স্ত্রীকে জানায়, তাঁকে একটি জায়গায় বেড়াতে নিয়ে যাবে। সেখানে তাঁর বন্ধুরা থাকবে। এতে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করে রতন। ওই মহিলা আবারও বাড়ি চলে যায়। গত শুক্রবার স্ত্রী বাড়ি থেকে বেরোয়। নানা অছিলার পর স্ত্রীকে ওই আট যুবকের হাতে তুলে দেয় সে।
The post স্বামীর মদতে মহিলাকে রাতভর গণধর্ষণ ৮ যুবকের, অভিযোগ দায়ের নির্যাতিতার appeared first on Sangbad Pratidin.