সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহম্মদ ইউনুসের 'নতুন' বাংলাদেশে বিচারের নামে প্রহসন! ফের হাই কোর্টে পিছিয়ে গেল চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের শুনানি। গত নভেম্বর মাস থেকে গারদের ওপারের রয়েছেন ইসকনের এই সন্ন্যাসী। শুধু তারিখের পর তারিখ বদলাচ্ছে। ছয় মাস ধরে পিছচ্ছে জামিনের শুনানি। কারাগারে অসুস্থও হয়ে পড়েছেন চিন্ময়। কিন্তু তাতে কোনও কর্ণপাত করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। প্রশ্ন উঠছে, শুধুমাত্র হিন্দু হওয়ার কারণেই কি তাঁর মামলার শুনানি দীর্ঘায়িত হচ্ছে? আর কতদিন জেলে থাকতে হবে তাঁকে?
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় প্রভুর জামিন প্রশ্নে রুল শুনানি এক সপ্তাহ পিছিয়েছে। বুধবার বিচারপতি মহম্মদ আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মহম্মদ আলি রেজার হাই কোর্ট বেঞ্চে রুল শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আবেদনে শুনানি পিছিয়ে যায়। অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মহম্মদ আসাদুজ্জামান এই বিষয়ে শুনানির জন্য সময় চান। আদালত সময় মঞ্জুর করে এক সপ্তাহের জন্য শুনানি মুলতবি করেন। জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কারাগারে রয়েছেন।
এনিয়ে চিন্ময়ের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য জানান, “অ্যাটর্নি জেনারেল তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা জানার জন্য সময় নিয়েছেন। এজন্য রুল শুনানি পিছনোর আবেদন করেন। আদালত তার আবেদন মঞ্জুর করেছে। আমি বলেছি চিম্ময় দাস অসুস্থ। দ্রুত শুনানি করা দরকার। এভাবে তদন্তের অগ্রগতি জানার জন্য জামিন প্রশ্নে রুল শুনানি পিছনোর জন্য আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।” প্রসঙ্গত, চিম্ময় দাসকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রুল জারি করে হাই কোর্টের এই বেঞ্চ।
উল্লেখ্য, গত ২৫ নভেম্বর বিকালে ইসকনের সন্ন্যাসীকে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ২৬ তারিখ চট্টগ্রামের আদালতে তোলা হয় তাঁকে। আনা হয় রাষ্ট্রদোহ মামলা। শুনানি শেষে জামিন খারিজ হয়ে যায় চিন্ময় প্রভুর। এরপর হামলার মুখে পড়ে আইসিইউ-তে ভর্তি হতে হয় তাঁর আর এক আইনজীবীকে। এই গ্রেপ্তারি নিয়ে বাংলাদেশে প্রতিবাদের ঝড় তোলেন হিন্দুরা। কড়া বার্তা দেয় ভারতও। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। প্রায় ছয় মাস হয়ে গেলেও গারদের পিছনেই রয়েছেন চিন্ময় প্রভু। গত ৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে তাঁর শুনানি ছিল। কিন্তু ‘প্রাণভয়ে’ ৫১ জন আইনজীবী দলের কেউই চিন্ময়ের হয়ে আদালতে সওয়াল করতে আসেননি। ফলে পিছিয়ে যায় জামিন মামলার শুনানি। পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয় ২ জানুয়ারি। সেদিনও জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে পিছিয়ে যায় শুনানি। এরপর ১৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আদালত থেকে মামলা যায় উচ্চ আদালতে। কিন্তু সেখানেও মিলছে না বিচার। হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশে মৌলবাদীদের হাতে নিপীড়িত হিন্দুদের হয়ে আওয়াজ তোলার জন্যই তাঁকে নিশানা করা হচ্ছে, একথা স্পষ্ট।