অরিঞ্জয় বোস: বক্তা বেজিং অলিম্পিকে সোনাজয়ী অভিনব বিন্দ্রা। যাঁর পরিচয় নতুন করে দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। তা, সেই বিন্দ্রা শনিবার এক নতুন মহাসম্মানে ভূষিত হলেন। অলিম্পিক অর্ডার পেলেন। যার পর তিনি খোলাখুলি সাক্ষাৎকার দিলেন ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’-কে।
প্রশ্ন: শনিবার দিনটা তো আমার কাছে মহামূল্যবান। অলিম্পিক অর্ডার পেলেন আপনি। অনুভূতিটা একটু বলবেন?
অভিনব: আমার কাছে এটা বিশাল সম্মানের। গর্বেরও। অলিম্পিকের সর্বোচ্চ সম্মান পেলাম। খুবই ভালো লাগছে। জানেন, ছোট থেকে অলিম্পিকের মধ্যে একটা অন্তর্নিহিত অর্থ খুঁজে পেতাম আমি। অলিম্পিক রিং আমার কাছে সব সময় একটা বিশেষ অর্থ বহন করত।
[আরও পড়ুন: অলিম্পিকে শেষ ভারতের অভিযান, ৬টি পদক জিতে ফিরছেন নীরজ-মনুরা]
প্রশ্ন: তাই?
অভিনব: হ্যাঁ। অ্যাথলিট হিসেবে যতটা পেরেছি, করেছি। অ্যাথলিট হিসেবে কেরিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার পর ঠিক করেছিলাম, অলিম্পিককে যতটা পারব ফিরিয়ে দেব। অলিম্পিক মুভমেন্টকে ফিরিয়ে দেব। পরিষ্কার বলছি, এই সম্মান ভালো কাজ করার জেদ আমার বাড়িয়ে দিল।
প্রশ্ন: আপনি ভারতের সবচেয়ে তরুণ অ্যাথলিট, যিনি এই মহাসম্মান পেলেন। সরি। কোনও ভারতীয় অ্যাথলিটই এই সম্মান আগে কখনও পাননি। আপনিই প্রথম!
অভিনব: কী বলব বলুন? আমি সব সময় চেয়েছি, খেলার মধ্যে যে শক্তি আছে, যে এনার্জি রয়েছে, সেটাকে দেশ গড়ার কাজে ব্যবহার করতে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অলিম্পিক চেতনাকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কী কী করছি আমি? কোন কোন প্রোগ্রামের সঙ্গে জড়িয়ে? স্কুল পড়ুয়াদের জন্য কী কী করা হচ্ছে? দেখুন, খেলার শক্তি শুধুমাত্র খেলার মাঠের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। তার ব্যপ্তি অনেক বড়। আমি চাই ভারতের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে খেলার সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দিতে। যা কি না দেশকে এগিয়ে দেবে। আবারও বলছি, অলিম্পিকে কে ক’টা সোনা পেল কিংবা পদক পেল, সেটাই সব কিছু নয়। খেলার ভূমিকা তার চেয়ে অনেক, অনেক বড়। আমরা চাই, খেলার এনার্জিকে ব্যবহার করে দেশের তরুণদের সঠিক দিশা দেখাতে। সঠিক রাস্তায় এগিয়ে দিতে।
[আরও পড়ুন: অলিম্পিক পদক পাবেন ভিনেশ? ক্রীড়া আদালতের রায় মঙ্গলবার]
প্রশ্ন: এত বড় অ্যাথলিট আপনি। এত বড় সম্মান পেলেন। কিন্তু তার পরেও আপনার সহমর্মিতা দেখার মতো। বিশেষ করে কুস্তিগির বিনেশ ফোগতের ক্ষেত্রে সেটাই দেখা গেল।
অভিনব: কী যে বলেন! আরে, আমি অ্যাথলিট পরে, আগে তো মানুষ। আমরা সবাই তাই। মানুষে-মানুষে যোগাযোগ থাকবে না? সহমর্মিতা থাকবে না? আর এই সহমর্মিতা আমি শিখেছি, খেলার সময় থেকে। আমি শুধু চেয়েছি, সেই মূল্যবোধকে ধরে রাখতে। অলিম্পিক মুভমেন্টের শিক্ষাটাই তো তাই। অলিম্পিক মুভমেন্ট সহমর্মিতা শেখায়। একে অন্যের পাশে দাঁড়াতে শেখায়। আমি ঠিক সেটাই করেছি। একজন মানুষ হিসেবে বিনেশের জন্য সর্বনিম্ন আমি এটুকুই করতে পারতাম। ওর পাশে দাঁড়াতে পারতাম।