সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুঃস্বপ্নের প্রহর কাটিয়ে পুনর্মিলনের পালা। হিংস্র তালিবানের (Taliban) হাত থেকে অসুস্থ, একরত্তি সন্তানকে বাঁচাতে কাবুল বিমানবন্দরে উদ্ধারকারী মার্কিন সেনার হাতে ছুঁড়ে দিয়েছিলেন মা। কাতরকণ্ঠে আবেদন করেছিলেন, বাচ্চাটি খুব অসুস্থ। সেনারা যেন দয়াপরবশ হয়ে তাকে একটু সুস্থ করে, বাঁচিয়ে তোলে। দেশের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি থেকে তাকে অনেক দূরে পাঠিয়ে দেয়। তালিবানি অরাজকতায় মা-সন্তানের দৃশ্য ইস্পাতকঠিন মার্কিন সেনার (US Marine) শ্যেনদৃষ্টিও নরম হয়ে গিয়েছিল।
তবে সেই দুঃস্বপ্নের মুহূর্ত কাটিয়ে সুসময় ফিরল। মার্কিন সেনার সহায়তায় ওই শিশু সুস্থ হয়ে বাবার কাছে ফিরেছে। তবে কতদিন সে রক্তাক্ত আফগানভূমে (Afghanistan) সুরক্ষিত থাকবে, সেই প্রশ্ন উঠলেও আপাতত এই মিলন কাহিনি যেন ঘোর আঁধারের মাঝে একচিলতে আলো।
গত বুধবার। ভিড়ে ঠাসা কাবুল বিমানবন্দরে (Kabul Airport) প্রতি মুহূর্তে রচিত হচ্ছিল নতুন নতুন চমকপ্রদ দৃশ্য। তেমনই এক ছবি ভাইরাল হয়েছিল নেটমাধ্যমে। একদিকে মার্কিন ও ব্রিটিশ সেনা। অন্যদিকে অসহায় আফগান নাগরিক। মাঝে কাঁটাতারের বেড়া। কাবুল বিমানবন্দরে ঢোকার সুযোগ নেই বুঝেও অন্তত সন্তানকে জঙ্গিদের হাত থেকে বাঁচাতে মরিয়া অভিভাবকরা। আর তাই ঝুঁকি নিয়ে কাঁটাতারের ওপারে ছুঁড়ে দিচ্ছেন সন্তানকে। সঙ্গে অনুরোধ, সেনারা যেন লুফে নেন তাদের। আর তুলে দেন অন্য বিমানে। এই মর্মস্পর্শী দৃশ্য দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেন না মার্কিন সেনাকর্মীরাও।
[আরও পড়ুন: Afghanistan Crisis: নয়া সমীকরণ! তালিবানের হাত ধরলেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানির ভাই]
মা-বাবার সেই আর্তি অবশ্য ফেলেনি উদ্ধারকারীরা। তাঁরা পরম যত্নে দুধের শিশুটিকে কাবুল বিমানবন্দরে নিজেদের স্বাস্থ্যশিবিরে রেখে চিকিৎসা করিয়েছেন। সেখানে কর্মরত মেজর জেমস স্টেঞ্জার জানিয়েছেন, ”সেদিন সেই ভিডিওতে যে শিশুটিকে ছুঁড়ে দিতে দেখা গিয়েছিল, তাকে আমরা নিজেদের হেফাজতে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। সুস্থ হয়ে ওঠার পর তাকে বাবার কোলে দেওয়া হয়েছে। আপাতত বিমানবন্দরে নিরাপদে রয়েছে বাবা ও সন্তান।” এক ব্রিটিশ সেনা অফিসার জানাচ্ছেন, তালিবান জমানায় স্রেফ সন্তানের নিরাপত্তার জন্য কাবুল বিমানবন্দরে যেভাবে তাদের কাঁটাতার পেরনোর জন্য ছুঁড়ে দেওয়া হচ্ছে, সেসব দেখে বহু সেনাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছেন। কিন্তু তালিবানদের নিষ্ঠুরতায় কোনও বিরাম নেই।