নিরুফা খাতুন: স্বাধীনতা দিবসে (Independence Day) পরাধীনতার গ্লানি। আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে এই অনুভব নিয়েই দিন কাটালেন কলকাতায় বসবাসকারী আফগানরা। এমন আনন্দের দিনে চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না তাঁরা। তবে সে অশ্রু আনন্দের নয়, ঘোর বেদনার, যন্ত্রণার। তাঁদের মাতৃভূমি তালিবানের (Taliban) দখলে চলে গিয়েছে। দেশজুড়ে অরাজকতা। আজকের দিনটিকে উদযাপন করতে গিয়েও তালিবানের গুলিতে নিহত হয়েছেন কয়েকজন। এই অবস্থায় দেশ থেকে কয়েক যোজন দূরত্বে পার্কসার্কাসে বসে বেদনাভারে জর্জরিত হওয়া ছাড়া কী-ই বা করার আছে তাঁদের? তবে আশ্রয়দাতা ভারতের জন্যও আবেগ কম নেই। অশ্রুসজল কণ্ঠে স্বদেশের স্বাধীনতার দিন তাই ভারত-আফগানিস্তানের পতাকা পাশাপাশি রেখে তাঁরা স্লোগান তুললেন, ‘ভারত জিন্দাবাদ, পাকিস্তান মুর্দাবাদ।’
১৯১৯ সালে ১৯ আগস্ট স্বাধীন হয়েছিল আফগানিস্তান (Afghanistan)। অবশ্য ব্রিটিশদের হাত থেকে পুরোপুরি মুক্তি পেতে আরও দু’বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল আফগানদের। বৃহস্পতিবার কলকাতায় বসে স্বাধীনতা দিবস পালন করেন আফগানরা। নিজেদের জাতীয় সংগীতও (National Anthem) গাইলেন। কিন্তু স্বাধীনতা দিবস কি? তা তো নয়। ১০২ বছর পর তো আবার নতুন করে পরাধীনতার শিকল আফগানদের জীবনে। কারণ, আবার যে তালিবান শাসনের অধীনে ‘কাবুলিওয়ালা’র দেশ।
[আরও পড়ুন: SSKM-এ সারপ্রাইজ ভিজিট মুখ্যমন্ত্রীর, প্রতি সপ্তাহে নজরদারির জন্য যাবেন, জানালেন Mamata]
গত রবিবার তালিবান আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে। তারপর থেকে আতঙ্কে দলে দলে আফগানরা দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন। দীর্ঘ বছর আগে মুলুক ছেড়েছিল হাসিম, খালিউরের পূর্ব পুরুষরা। তবে তাদের শিকড় ছিন্ন হয়নি । সেখানে এখনও তাদের পরিজনেরা রয়েছেন। এদিন আফগানিস্তানের পতাকা বুকে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন হাসিম খান। তিনি বলেন, ”বহুকাল আগে মুলুক ছেড়ে এসেছি।তা বলে দেশের সঙ্গে সম্পর্ক তো একেবারে ছিন্ন হয়ে যায়নি। এখনও সেখানে আমাদের আত্মীয় পরিজন রয়েছে।”
[আরও পড়ুন: চা বিক্রেতাদের সাহায্যে হাত বাড়াল Metro Dairy, মান বজায় রেখেই এল সস্তায় দুধের প্যাকেট]
তালিবান চলে আসায় সেখানকার মানুষ ফের যেন পরাধীন হয়ে গেল। অল ইন্ডিয়া পাখতুনস জগরা-ই হিন্দের সভাপতি ও আবদুল গফ্ফর খানের বংশধর ইয়াসমিন নিগার খান বলেন, ‘‘আফগানের জাতীয় পতাকা খুলে ফেলে তালিবান নিজেদের পতাকা লাগিয়েছে। তালিবান যদি আফগান নাগরিক হতো, তাহলে কখনও আফগানের পতাকা খুলে নিজেদের পতাকা লাগাত না। আমরা চাই, আতঙ্কে দেশ না ছেড়ে আফগানরা এককাট্টা হয়ে তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াই করুক।”
দেখুন ভিডিও:
ছবি ও ভিডিও: পিণ্টু প্রধান।