রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: অমিত শাহের (Amit Shah) বঙ্গ সফরের ঠিক আগের দিন ঐক্যের ছবি তুলে ধরতে গিয়ে বুধবার ধর্মতলায় দলীয় মঞ্চে ‘বেসুরো’ অর্জুন সিংয়ের কাছে ফের ধাক্কা খেল বিজেপি। সুকান্ত মজুমদার থেকে দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দু অধিকারীদের উপস্থিতিতে সভায় বক্তব্য রাখার জন্য অর্জুনের নাম ঘোষণা করা হয়। সেই সময় মঞ্চের পিছনে ছিলেন তিনি। হাত নেড়ে তিনি সভার সঞ্চালককে ভাষণ দেবেন না বলে জানিয়ে দেন। দলীয় কর্মসূচিতে অর্জুনের এমন আচরণ ফের তৃণমূলমুখী হওয়ার জল্পনা উসকে উঠেছে।
যদিও বারাকপুরের বিজেপি সাংসদের পালটা দাবি, “শরীর ঠিক ছিল না। তাই ভাষণ দিতে চাইনি।” পাটের দাম নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ানো অর্জুন (Arjun Singh) বুধবারও বলেন, “আগামী ৯ মে পাটশিল্পের নানা সমস্যা নিয়ে আলোচনায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠক আছে। ললিপপ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট নই। সমস্যা মিটলে খুশি। না হলে আন্দোলনে নামব। কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে আমার লড়াই। শেষ দেখে ছাড়ব। শ্রমিকদের জন্য সব কিছু করতে রাজি।”
[আরও পড়ুন: ‘স্তনের ওপর ট্যাটু দেখাতেই হবে!’, ইদের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে কটাক্ষের শিকার নুসরত]
উল্লেখ্য, পাটশিল্পের দুরবস্থা নিয়ে দিনকয়েক ধরে ‘বিদ্রোহী’ অর্জুন সিং। বিজেপি সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। পাটশিল্পের সমস্যার কথা বললেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। লাগাতার আন্দোলন প্রশমনে শনিবার দিল্লিতে তলব করা হয় তাঁকে। সেই মতো দিল্লিতে যান বারাকপুরের সাংসদ। দেখা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে। এরপর সোমবার বস্ত্রমন্ত্রকের সচিবের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি সাংসদ। প্রায় ঘণ্টাখানেক কথা হয় দু’জনের।
বৈঠক সেরে বেরিয়ে খোদ অর্জুন সিংয়ের গলাতেই শোনা যায় সমস্যা সমাধানের ইঙ্গিতের আশা। তিনি জানান, পাটশিল্পের সমস্যা সমাধানে আগামী ৯ মে দিল্লিতে ফের বৈঠকের ডাক দিয়েছে বস্ত্রমন্ত্রক। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেবে বস্ত্রমন্ত্রক, রাজ্য সরকার এবং পাটশিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রতিনিধিরা। ওই বৈঠকেই সমস্যা মিটবে বলে আশা। আগামী ৯ মে পর্যন্ত কোনও আন্দোলন যে হবে না তা জানিয়েছেন অর্জুন সিং (Arjun Singh)। তবে বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তাঁর আন্দোলন ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই দলবদলের জল্পনা জোরাল হয়েছে। জল্পনার মাঝে বুধবার দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ায় জল্পনা খারিজ হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল ছিল। তবে মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখতে না চাওয়ার ফলে আরও একবার তৃণমূলে ফেরার জল্পনা যে মাথাচাড়া দিল, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।