সুমন করাতি, হুগলি: স্কুলে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে পড়ুয়ার উপস্থিতির ঘটনায় হইচই সর্বত্র। মুর্শিদাবাদের ঘটনায় তোলপাড়ের মাঝে এবার স্কুলের জলের ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হল মদের বোতল। মদমিশ্রিত পানীয়তে তেষ্টাও মেটায় খুদেরা। আরামবাগের মুথাডাঙা চক্রের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনায় জোর চাঞ্চল্য।
গত শনিবার খুদে পড়ুয়াদের মুখে অন্য রকম গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। কেউ কেউ দাবি করে, স্কুলের ট্যাঙ্কের জলপানের পর থেকে এই গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। প্রথমে তা বিশ্বাস করেননি আরামবাগের মুথাডাঙা চক্রের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। শিক্ষকেরাও ওই জল পান করেন। জল খেয়ে তাঁরা মদের গন্ধ পান। একতলা স্কুলভবনের ছাদের ট্যাঙ্কের ঢাকনা খোলা হয়। সেখান থেকে অর্ধেক মদ ভর্তি একটি বোতল উদ্ধার করা হয়। ঘটনার জেরে গ্রামে শোরগোল পড়ে। স্কুলে মিডডে মিলও বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষকেরা মনে করছেন, কেউ মদ খেয়ে ট্যাঙ্কে বোতল ফেলে দিয়েছেন, তা থেকে চুঁইয়ে মদ বেরিয়ে জলে মিশেছে। প্রধান শিক্ষক বলেন, “বিষয়টি স্কুলের গ্রাম শিক্ষা কমিটি, অভিভাবক এবং স্কুল পরিদর্শককে জানানো হয়েছে। অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেই মিডডে মিল আপাতত বন্ধ।” গ্রাম শিক্ষা কমিটির তরফে বিষয়টি পুলিশকেও জানানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: গভীর রাতে সোনাক্ষীর রিসেপশনে ‘ঘটক’ সলমন! ‘দাবাং’ মেজাজে এন্ট্রি ‘চুলবুল পাণ্ডে’র, তারপর?]
মুথাডাঙা চক্রের স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) বিশ্বজিৎ গনাই বলেন, ‘‘শুক্রবার রাতে বা সন্ধ্যায় স্কুলের জলের ট্যাঙ্কে কেউ মদের বোতল ফেলেছে বলে শুনেছি। বোতলটিও উদ্ধার হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তা নিয়ে অভিভাবক এবং গ্রাম শিক্ষা কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠক ডাকতে বলেছি স্কুল কর্তৃপক্ষকে।” স্কুলটিতে কোনও সীমানা-প্রাচীর নেই। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৯১। চার জন শিক্ষক এবং এক জন পার্শ্বশিক্ষক আছেন। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে স্কুল শুরু হয়। পড়ুয়ারা এসে মুখ-হাত ধোওয়ার সময়েই জলে বিকট গন্ধ পায়। কিছুক্ষণের গ্রামে খবর ছড়িয়ে পড়ে। গুজব রটে, স্কুলের জল খেয়ে ছেলেরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অভিভাবকেরা স্কুলে ভিড় করেন। সাময়িক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
অভিভাবকদের অভিযোগ, আগে একাধিকবার স্কুল চত্বরে খালি মদের বোতল পাওয়া গিয়েছে। স্কুল রক্ষণাবেক্ষণে গ্রাম শিক্ষা কমিটির যে ভূমিকা থাকার কথা তা নেই বলেও অভিযোগ। গ্রাম শিক্ষা কমিটির সভাপতি জয়ন্তী প্রতিহার বলেন, “স্কুলের প্রাচীর নির্মাণের জন্য অনুমোদন এবং তহবিলের আবেদন করা আছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই সব অন্যায় রুখতে গ্রামবাসীদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।”