সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাল্যবিবাহ রুখতে কড়া অসম (Assam) সরকার। রাজ্যজুড়ে চলছে গ্রেপ্তারি অভিযান। বাল্যবিবাহের অভিযোগ এখনও অবধি ৩,৪৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে অসম পুলিশ। এই ঘটনায় অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার (Himanta Biswa Sarma) বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ এনেছে বিরোধী দলগুলি। যদিও বুধবার বিধানসভায় নিজের ভাষণে হিমন্ত দাবি করলেন, ধরপাকড়ে অযথা সাম্প্রদায়িক রং লাগানো হচ্ছে। তিনি জানান, প্রায় সম সংখ্যক হিন্দু এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর হুঁশিয়ারি, প্রতি ছয় মাস অন্তর এই অভিযান চলবে। ২০২৬ সালের মধ্যে অসমকে বাল্যবিবাহ মুক্ত করা হবে। এত বলেও ভরা বিধানসভায় ‘আমরা-ওরা’ তত্ত্ব আওড়ালেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী।
অসম পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাল্যবিবাহের অভিযোগ ৪৬৭০টি মামলা হয়েছে। মোট অভিযুক্তের সংখ্যা ৭,১৪২। গ্রেপ্তার হওয়া ৩,৪৮৩ জনের মধ্যে ২,২৫৩ জন জামিনে মুক্ত হয়েছেন। বাকিদের জেলে পাঠানো হয়েছে। হিমন্তের দাবি, ফেব্রুয়ারি ৩ তারিখ অবধি যত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাতে মুসলিম ও হিন্দুর অনুপাত ৫৫:৪৫। যদিও বিরোধীদের চাপেই যে হিন্দুদের গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি তাও খোলসা করেছেন।
[আরও পড়ুন: ‘দেশ বিরোধী মন্তব্য করিনি, সংসদেই জবাব দেব’, লন্ডন বক্তৃতা নিয়ে মুখ খুললেন রাহুল]
বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে নিজের ভাষণে হিমন্ত বলেন, “আমাদের লোকদেরও (হিন্দু) গ্রেপ্তার করেছি, না হলে আপনাদের (বিরোধী দলের বিধায়ক) আবার মন খারাপ হবে। ৩ তারিখ অবধি মুসলিম ও হিন্দুর গ্রেপ্তারির অনুপাত ৫৫:৪৫।” বিরোধীদের প্রতি কটাক্ষ ছুড়ে হিমন্ত বলেন, “১১ বছরের বালিকার প্রতি আপনাদের মমতা নেই, অথচ অপরাধীদের জন্য চোখ ফেটে জল আসছে”।
[আরও পড়ুন: গরু পাচার মামলায় এবার নজরে তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন, দিল্লিতে তলব করল ইডি]
হিমন্ত আরও বলেন, “জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষার তথ্য অনুয়ায়ী এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি ধুবরি এবং দক্ষিণ সালমারায় (মুসলিম অধ্যূষিত জেলা)। ডিব্রুগুড় কিংবা তিনশুকিয়াতে নয়। কিন্তু আপনারা সবকিছুকে সাম্প্রদায়িক রং দিতে ব্যস্ত। আমি ডিব্রুগড়ের পুলিশ প্রধানকে বলেছে, ওখানেও কয়েক জনকে আটক করুন। কংগ্রেস সরকারের আমলে কেন্দ্রীয় সংস্থার সমীক্ষাতেও বলা হয়েছিল, নিম্ন অসমের জেলাগুলিতে (যেখানে মুসলিম নাগরিক বেশি) সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহ এবং সন্তান প্রসবের ঘটনা ঘটে থাকে।”