সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটবাক্সে বাংলার মানুষ আপনাকে রাজনৈতিক শরণার্থী বানাবে। মঙ্গলবার ভারচুয়াল জনসভা করার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দেগে এই মন্তব্যই করলেন অমিত শাহ। শুধুমাত্র রাজনীতি করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করছেন বলেও দাবি করেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী শরণার্থীদের অধিকার রক্ষা করতেও চান না।
এপ্রসঙ্গে বলেন, ‘১৯৪৭ সালে যে ভুল হয়েছিল আমরা ২০১৯ সালে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) চালু করে তা শুধরে নিয়েছি। দেশভাগের সময় যে মানুষগুলি বঞ্চিত হয়েছিলেন। তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দিয়েছি। ওইদিন মমতা দিদির চেহারা আমি দেখেছিলাম। রাগে একদম লাল হয়ে গিয়েছিল। আমি জীবনে কোনওদিন কোনও মানুষকে এইভাবে রাগতে দেখিনি। জনসভা করেছেন, রাস্তায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন এবং ধরনাও দিয়েছেন। আমি মমতা দিদিকে প্রশ্ন করতে চাই, মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষরা আপনার সঙ্গে কী অন্যায় করেছেন? কেন আপনি ওদের সঙ্গে এইরকম ব্যবহার করছেন? আসলে উনি ওই মানুষগুলিকে রাজনৈতিক শরণার্থী বানিয়ে রেখে ভোটব্যাংক মজবুত রাখতে চেয়েছিলেন।’
[আরও পড়ুন: এবার শপিংমলেও দিতে হবে প্রবেশমূল্য! ভিড় কমাতে সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষের]
বাংলায় করোনা ও আমফান ঝড়ের ফলে মৃত্যু হওয়া মানুষদের আত্মার শান্তি কামনা করে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁদের পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা রয়েছে। ফলে গত লোকসভা ভোট গোটা দেশে আমরা ৩০৩টি আসন জিতেছি। কিন্তু সবথেকে বেশি খুশি হয়েছি বাংলা থেকে ১৮টি আসন পেয়ে। কারণ সারা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলেও বাংলাতে হয়নি। তাই এখানকার ১৮টি আসন আমাদের কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। আজও এখানে রাজনৈতিক কারণে মানুষকে খুন করা হয়। রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা এখানে সব থেকে বেশি। ২০১৪ সাল থেকে শতাধিক বিজেপি কর্মীদের খুন করা হয়েছে এখানে। পার্টি কর্মীদের এই বলিদান ব্যর্থ হবে না। তাঁদের এই আত্মত্যাগকে সম্মান জানাই। এই রাজ্যের মানুষের আর্শীবাদেই আজকে ক্ষমতায় বসেছেন মোদিজি। তাই সবসময় বাংলার মানুষের পাশে আছি আমরা। আগামীতেও এখানকার বাসিন্দাদের সমস্ত সুখদুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করব। আমরা করোনার সময় রাজ্যকে যা সাহায্য করেছি তা বাইরেও এখানকার মানুষকে ১১ হাজার কোটি টাকার সুবিধা দিয়েছি।’
তৃণমূল সুপ্রিমোকে আক্রণ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে চাই রাজনীতি করার জন্য অনেক ময়দান আছে। দয়া করে এই রাজ্যের গরিব মানুষের সঙ্গে রাজনীতি করবেন না। এই রাজ্যের সরকারের জন্য এখানকার কৃষকরা কেন্দ্রের টাকা পান না। প্রচুর মানুষের প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের বিরোধিতার জন্য আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারেন না। আসলে এর ফলে মোদিজির জনপ্রিয়তা বেড়ে যাবে এই ভয়ে মমতাদিদি আয়ুষ্মান ভারত এখানে চালু করতে দিচ্ছেন না। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ভয় পাচ্ছেন। রাজ্যবাসীকে বলব অপেক্ষা করুন। বিজেপি এখানকার ক্ষমতায় এলেই আয়ুষ্মান ভারত চালু করবে। এখানে প্রতিদিন গরিব মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। যে আয়ুষ্মান প্রকল্পের জন্য সারা ভারতের মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। বাংলার মানুষ সেই সুবিধা নিতে পারছেন না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু, চিন্তা করবেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমতায় বসলেই এখান এই প্রকল্প চালু হয়ে যাবে। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী শপথ নেওয়ার এক মিনিটের মধ্যে আমরা আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করে দেব। রাজ্যে পরিবর্তন এলেই তা সম্ভব হবে। তাই সবাই এগিয়ে এসে বাংলার এই পরিবর্তনের লড়াইয়ে সঙ্গী হোন। এই বাংলার মাটিতে জন্ম নেওয়া ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আমাদের দলের প্রথম সভাপতি ছিলেন। তিনি দেশের ঐক্য বজায় রাখার জন্য কাশ্মীরে গিয়ে আত্মবলিদান দেন। সেই কথা আমরা আজও ভুলিনি। তাই সবসময় বাংলার সমস্ত বিষয় আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
[আরও পড়ুন :পেটের টান, করোনাকে ‘কবর’ দিয়ে কাজে ফিরলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার আদিবাসী মহিলারা]
The post ‘ভোটবাক্সে বাংলার মানুষ আপনাকে রাজনৈতিক শরণার্থী বানাবে’, মমতাকে তোপ শাহের appeared first on Sangbad Pratidin.